একজন মানুষ মারা গেলে যে ১৫ টি কাজ ভুলেও করবেন না।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহআজকে আমরা আলোচনা করব দোষ মারা গেলে যে 15 টি কাজ করা যাবে না তা সম্পর্কে। মৃত্যু যেহেতু বলে কয়ে আসেনা সেহেতু বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় সবাইকে। যতই সমস্যা হোক না কেন এই 15 টি কাজ ভুল করেও করবেন না।
লাশকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দাফোন করতে হবে।
যেমন কোন ব্যক্তি এমন সময় মারা গিয়েছেন যে না ফোন করতে হ তখন প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে। এমনকি একটানা সাত থেকে আট ঘন্টা বৃষ্টি হচ্ছে।এমন বৃষ্টি যেকোন ভাবে লাশকে কোন স্থান পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এক্ষেত্রে কোন সমস্যা নেই।
কিন্তু ঢাকা থেকে মৃত ব্যক্তির কোন আত্মীয়-স্বজন আসবে এই জন্য আপনি একদিন লাশ ফ্রীজিং করে রেখে দেবেন এই বিষয়ে ইসলাম সমর্থন করে না। সুন্নাহ হচ্ছে একজন মানুষ মারা যাবার পর যত দ্রুত সম্ভব তাকে দাফন করা। প্রাকৃতিক কোন সমস্যা ছাড়া লাশকে বেশিক্ষণ কবর না দিয়ে রাখা জাবে না।
মানুষ মারা গেলে তার খবর অন্যের নিকট পৌঁছানোর জন্য মসজিদের মাইক ব্যবহার করা যাবে না।
আপনার আমার এলাকায় মানুষ মারা গেলে সাধারণত মসজিদের মাইক ব্যবহার করে অন্যদের জানানো হয়।অনেকে মাইক ভাড়া করে দিন বাপি মানুষকে জানান দিয়ে থাকেন।সেটা হয়তো আপনি মানুষকে জানানোর জন্য করতে পারেন।
কিন্তু এক্ষেত্রে মসজিদের মাইক ব্যবহার করাটা অসুন্দর। মসজিদের মাইক সাধারন আজানের জন্য নির্ধারিত।শোক সংবাদ আপনি চাইলে মানুষকে দিতে পারেন কিন্তু সেটা এত সময় নেয়া যাবে না যে সারাদিন আপনি মাইকিং করে বেড়াবেন। এটা শরীয়ত সম্মত নয়।
এমন কিছু আচরণ করা যাবে না যেটা ইসলাম সমর্থন করে না
চিৎকার করে কান্না করা, চুল ছেড়া, শরীরের কোন জায়গায় আঘাত, করা মাটিতে থাপড়ানো, এগুলো জায়েজ না। দুঃখ আপনার আসবেই আপনার আত্মীয়দের আসবে এবং আপনার বাবা মা বেঁচে থাকলে তাদের আসবে। কিন্তু ওই কান্নাটা হওয়া চাই শালীনতার সাথে।
এমন ভাবে কান্না করা যাবে না যে কান্না আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পছন্দ করেন না।
অর্থাৎ এই মৃত্যু আল্লাহতালার ইচ্ছায় ঘটেছে কিন্তু আপনি এমন ভাবে অভিযোগ করছেন যেন আল্লাহ তাআলা সিদ্ধান্ত ভুল নাউজুবিল্লাহ। আবার অনেকে বলে থাকে যে তার অকাল মৃত্যুতে আমরা সবাই শোকাহত কিন্তু এ অকাল বোলে ইসলামে কোন শব্দ নেই।
যদি বুঝে শুনে কেউ কথাটি বলে থাকে, তাহলে এটি কুফরি একটি বক্তব্য। কারণ আপনি কোরআনকে বিশ্বাস করছেন না। কেননা কোরআনে বলা হয়েছে কোন মানুষের সামনে যখন মৃত্যুর সময় চলে আসবে তখন তার জন্য একটু সময়ও বাড়ানো হবে না বা কমানো হবে না।
আল্লাহ রব্বুল আলামীন যতটুকু সময় দুনিয়ার বুকে তার জন্য নির্ধারিত করে দিয়েছেন ঠিক ততটুকু সময় তিনি পাবেন। অথচ আমরা মুসলমানেরা এই শব্দ ব্যবহার করে থাকি। অকাল মৃত্যু বলে কোন শব্দ নেই আপনার সবকিছু কালের মধ্যেই হচ্ছে।আপনি যদি বলেন তার আসলে সময় হয়নি কিন্তু আল্লাহ তুলে নিল নাউজুবিল্লাহ। এরকম কথা ভুলেও বলবেন না। কারণ এই বক্তব্যটি আল্লাহ তায়ালার সিদ্ধান্তের বিপরীতে চলে যায়। সুতরাং এরকম কথা বলা ইসলামে জায়েজ নেই।
মাদ্রাসার ছেলেপেলেকে টাকা পয়সা বিনিময়ে কোরআন খতম করার জন্য ভাড়া করা যাবে না।
অনেকেই মাদ্রাসার ছেলেদের ডেকে এনে টাকা পয়সার বিনিময়ে মৃত ব্যক্তির পাশে কোরআন খতম করতে বাধ্য করেন। এই ধরনের আমল আল্লাহ রাসূলের সুন্নাহ সম্মত নয়। লাশের পাশে সুরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করার কিছু হাদিস পাওয়া যায়। কিন্তু মাদ্রাসার ছাত্রদের ডেকে কুরআন তিলাওয়াত করা কোন নিয়ম নেই।
মাদ্রাসার ছেলেরা কোরআন পড়লে যে কোরআনকে খাটো করা দেখাচ্ছে এমনটা বলা যাবে না। যেকোনো আমল করার সময় মনে রাখতে হবে যে সে আমলটির সুন্নত সম্পন্ন কিনা। অর্থাৎ সূরা ইয়াসিন যদি আপনি পড়েন, এক্ষেত্রে আপনার উচিত কাউকে ধরে না এনে কোরআন খুলে নিজেই মৃত ব্যক্তি পাশে বসে সুরা ইয়াসিন তেলাওয়াত শুরু করা।
যদি আপনার পিতামাতা বা নিকট আত্মীয় হয় তাহলে আপনার এই আমলটি সবচেয়ে বেশি কাজে লাগবে। অন্য যে কোন মাদ্রাসার ছেলে পেলে বা হুজুরের চেয়েও। আমাদের মনে রাখতে হবে যে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এবং তার সাহাবী যেসব আমল করেছেন আমরা শুধু সে সব আমলই করার চেষ্টা করব।
মৃত ব্যক্তি তার জীবনে নামাজ না পড়লে তার বিনিময়ে বিভিন্ন কাজ করা হয়ে থাকে।
একজন মৃত ব্যক্তি তার জীবনে নামাজ পড়তেন না তাই বলে আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে অন্য ধরনের চাল ডাল আহরণ করে সেটি গরিব মিসকীনকে দেওয়া হয়।এটিও ইসলাম সমর্থন করে না,এবং কোন কোরআন হাদিস থেকেও এটি পাওয়া যায়নি। সুতরাং এটি হচ্ছে একান্তই গুজব ফেনী নামাজ পড়েননি আল্লাহ তাআলার আদালতে তাকে দাঁড়াতেই হবে।
তিনি নামাজ পড়েননি বলে চাল ডাল সংগ্রহ করে কাপড় দেওয়ার কোন নির্দেশ আল্লাহ তাআলা দেননি। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে নামাজের কোন কাফফারা হয় না, নামাজের কাফফারা হলো শুধুই নামাজ, কোনো বেনামাজী বাবা যদি মারা যান এবং তার সন্তান যদি পার হয়ে নামাজ আদায় করে নেন তাহলে সেটা গ্রহণযোগ্য হবে না। কেননা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যার ওপর নামাজ ফরজ করেছেন তাকেই নামাজ পড়তে হবে।
লাশ দাফনের পর বেদাদি কিছু করা যাবে না।
লাশ দাফনের পর অনেককেই বেদাতি কিছু কাজকর্ম করতে দেখা যায়। যেমন, কোন ব্যক্তি মারা গেলে তার কবরের চারপাশে মার্বেল পাথর বা টাইলস দিয়ে কবরটিকে চিহ্নিত করে দেওয়া হয়। এসব কাজ হলেও করবেন না আল্লাহর রাসূল এসব কাজ করতে নিষেধ করেছেন।
তবে যদি শেয়ার কুকুরের কোন উৎপাত থাকে তাহলে আপনি শেয়ার কুকুরের হাত থেকে কবরকে রক্ষা করার জন্য স্থায়ীভাবে কবরের চারপাশ ঘিরে রাখতে পারে। তবে কবরস্থান করার সঙ্গে সঙ্গে কবর পাকা করার বিষয় আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
কেননা মৃত ব্যক্তি যদি কবরে ভালো থাকে তাহলে তাকে যেখানেই কবর দেওয়া হোক না কেন সেটা কোন বিষয় নয়। আর যদি সে কবরের ভেতরে ভালো না থাকে তাহলে উপরে সোনা দিয়ে মুড়িয়ে মিনার বানিয়ে দিলেও কোন লাভ হবে না। ভেতরে আগুন নেভানো যাবে না। সুতরাং যতদিন বেঁচে থাকেন নিজের ভালো কাজ করেন এবং অন্যকে ভালো কাজ করার উপদেশ দেন। কিন্তু মৃত্যুর পরে কবর পাকা করে কোন ফজিলত নেই।
মৃত ব্যক্তির কাজ করানোর জন্য যদি কেউ কোন দাবি করে থাকে তাহলে তা পূরণ করতে হবে।
মৃত ব্যক্তির জন্য কবর খনন করা অথবা তার জন্য জানাজা করার জন্য যদি কোন দাবি করা হয়ে থাকে তাহলে সেটা আপনাকেই দিতে হবে। কেননা সেটা একটি পরিশ্রমের কাজ। আর আত্মীয়-স্বজনরা কেউ যদি কোন পারিশ্রমিক ছাড়া এমনিতেই কবর খনন করে দেয় তাহলে সেটা জায়েজ।
কিন্তু কবর খোদাই করার জন্য কেউ যদি কোন পারিশ্রমিক দাবি করে, তাহলে অবশ্যই তাকে তার পারিশ্রমিক বা সম্মানি দিতে হবে। কেননা সে তার কাজ ফেলে আপনার কাজের সময় ব্যয় করেছে। আর যদি ফ্রিতে করে দিতে চাই তাহলে আলহামদুলিল্লাহ। এতে কোন সমস্যা নেই।
লাশের স্থানে আগরবাতি জ্বালানো।
রাশির স্থানে ৪০ দিন পর্যন্ত আগরবাতি জ্বালানোর কোন বিধান ইসলাম সমর্থন করে না। আপনি যদি সাধারণভাবে আগরবাতি বা আদর ব্যবহার করেন তাহলে সেটা সুন্নত। কিন্তু মৃত ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে কোন আগরবাতি জ্বালানো বা মোমবাতি জ্বালানো অথবা আতর ব্যবহার করা কোন বিধান ইসলামে নেই।
একটি সুগন্ধি ব্যবহার করেন জায়েজ রয়েছে কিন্তু এই স্থানে লাশ ছিল বলে সেখানে 40 দিন পর্যন্ত আগরবাতি জ্বালাচ্ছেন এই নিয়তে করলে তার জায়েজ হবে না। বলে ওলামায়ে কেরাম জানিয়েছেন।
মানুষকে খাওয়ানোর বিষয়।
আপনি ইচ্ছা করে মানুষকে খাওয়াতে পারে। কিন্তু সেটা তিনদিন অথবা 40 দিন নির্ধারিত করে খাওয়ানোর কোন নিয়ম নেই আপনি চাইলে খাওয়াতে পারেন কিন্তু সেটা তিন দিনের মাথায় করতে হবে অথবা শুক্রবারে করতে হবে অথবা ৪০ দিন পূর্ণ হলে পড়তে হবে এমনকি মৃত্যুবার্ষিকীর দিন করতে হবে এমন কোন বিধি-বিধান নেই আবার এমন কোন কাজ করা যাবে না যাতে করে বোঝাই না যাই যে সেটা বিয়ের আয়োজন নাকি মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে খাবার খাওয়ানো আয়োজন।
মৃত্যু বার্ষিকী পালন করা।
মৃত্যুবার্ষিকী পালনের কোন বিধি-বিধান আল্লাহ রাসুল সাঃ রেখে যাননি দান সদকার ওয়াজ মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে খাওয়ানোর কাজ অথবা মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়ার আয়োজনের কাজ সেটা আপনি চাইলে আপনার বাবা-মার জন্য যেকোনো সময় করতে পারেন কিন্তু বছরে একটা নির্দিষ্ট দিন বাছাই করে সেটা করা যাবে না।
মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে পশু মানত করা।
অনেকের মৃত ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে পশু মানত করে এবং পশু মানব করার পর কবরে গিয়ে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন এ সমস্ত কাজ ভুলেও করবেন না মানত কখনো কবরকে কেন্দ্র করে হবে না মান্নাত করতে হবে আল্লাহকে কেন্দ্র করে।
ইমাম সাহেবকে ভাড়া করা।
কোন ব্যক্তি মারা যাবার পর তার পরিবার থেকে কেউ ইমাম সাহেবকে ভাড়া করে এক মাস ব্যাপী তার কবরের পাশে কোরআন খতম করার নির্দেশ দেন। এর বদলে তাকে কিছু সম্মানী দেওয়া হয়। কিন্তু এতে কোন লাভ হবে না। যার পরিবারের সদস্য মারা গেছে তাদের মধ্যে কাউকে কোরআন তেলাওয়াত করতে হবে অযথা ইমাম সাহেবকে ডেকে এনে কোন লাভ হবে না।
কবর জিয়ারত করতে যাওয়া।
কবর জিয়ারত আপনি যেকোনো সময় করতে পারেন। এর জন্য কোন নির্দিষ্ট দিন ঠিক করা যাবেনা যেমন শবে বরাত, শবে কদর, জুম্মা, ঈদ, মৃত্যুবার্ষিকী এমন কিছু। আপনার যখন ইচ্ছা হবে আপনি তখনই কবর জিয়ারত করতে যেতে পারেন।
কবরের কাছে উল্টাপাল্টা কাজ করা।
যেমন, কবরকে ফুল দিয়ে ঢেকে, দেওয়া নিয়মিত পানি দেওয়া আর এমন ভক্তি করা হিন্দুরা যেমন মূর্তি পূজা করে তেমন করে কবরকে পূজার আসনে নিয়ে যাওয়া ভক্তি করা কি রকম কাজ ইসলামের জায়েজ নেই ইসলাম এটাকে সমর্থন করে না।
তাহলে আমাদের যখন কোন আত্মীয়-স্বজন মারা যাবে তখন আমরা এইসব বিষয়গুলো বর্জন করব। আর রাসূল সাঃ এর সুন্নাহ অনুসরণ করব। জীব মাত্রই মৃত্যু অনিবার্য।আল্লাহ তা'আলা বলেন তোমরা যেখানেই থাকো ই না কেন মৃত্যু তোমাদের স্পর্শ করবেই।(সূরা নিসা আয়াত 78)
তবে ইসলামে মৃত্যু কামনাকে অবৈধ মনে করে না নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন তোমাদের কেউ যেন কিছুতেই মৃত্যু কামনা না করে। এবং মৃত্যু আসার আগে তার জন্য দোয়া না করে। কেননা যখন তোমাদের কেউ মারা যায় তখন তার আমল বন্ধ হয়ে যায় আর মুমিনের দীর্ঘজীবন তার জন্য কল্যাণী বয়ে আনে (সহীহ মুসলিম হাদিস ৬৯৯৫) ।
একইভাবে ইসলাম আত্মহত্যা নিষিদ্ধ করেছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে পাহাড়ের উপর থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে সে জাহান্নামের আগুনে পড়বে চিরকাল সে জাহান্নামের আগুনের ভিতর করতে থাকে । একজন ব্যক্তির জন্য এত কিছু না করে নিজের সাবধান হন নিজের আমলের দিকে তাকান এবং নিজে যেন ভালো স্থান অর্জন করতে পারেন সেই পরিস্থিতি তৈরি করুন।
লেখক এর মন্তব্যঃ
আপনাকে যদি আমি উপযুক্ত তথ্য দিতে পারি তাহলে আপনি আপনার সকল বন্ধুদের সাথে এ বিষয়টি শেয়ার করবেন এবং ভালো লাগলে আমার ব্লগটি নিয়মিত ভিজিট করবেন।আপনাদের যদি আমার লিখা পড়ে ভালো লাগে তাহলে ইচ্ছা হলে আমার ব্লগটি নিয়মিত পরিদর্শন করবেন। সকলে ভালো থাকবেন ফি আমানিল্লাহ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url