হযরত মুসা আলাই সালাম এর সংক্ষিপ্ত জীবনী
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আজ আমরা জানবো হযরত মুসা আলাই সাল্লাম এর জীবনী। হযরত মুসা আঃ সালাম কে ইংরেজিতে বলা হয় মজেজ।তিনি হলেন আল্লাহর বার্তাবাহোক। কোরআন শরীফে অন্যান্য নবীর তুলনায় মুসা নবীর নাম বেশি বার উল্লেখ করা হয়েছে।
ধারণামতে মুসা আলাই সালাম জীবিত ছিলেন ১২০ বছর। হযরত মুসা আঃ এর সম্প্রদায়ের নাম ছিল 'বনি ইসরাইল'। হযরত মুসা আঃ সালামের জীবনী অত্যন্ত বেশি ঘটনাবহুল। তাই সকল বিষয় সংক্ষেপে আলোচনা করার মাধ্যমে আপনাদের সব বিষয়টি জানাতে চাই। যদি সকল ঘটনা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরতে চাই তাহলে আপনাদের আমার লেখা পড়তে অনেক সময় লাগবে। এবং বিরক্তবোধক করতে পারেন।
মুসা আলাই সালাম এর জন্মকালে ফেরাউন ছিল ফারাও রাজ্যের ১৮ তম রাজা। ফেরাউনের নাম কাবুজ বলে উল্লেখ করা হয়। ফেরাউন একদিন স্বপ্নে দেখলেন যে বনি ইসরাইল বংশে জন্মগ্রহণকারী পুত্র সন্তান কর্তৃক তিনি বিতাড়িত হবেন। তার রাজত্বের অবসান ঘটবে এবং যে ধর্মটি ফেরাউন প্রতিষ্ঠিত করেছিল সে ধর্মটিও পরিবর্তিত হয়ে যাবে।
এরপর তিনি তার সভা পরিষদের সকলকে এ বিষয়টি জানালেন এবং ব্যাখ্যা সম্পর্কে জানতে চাইলেন। ফেরাউনের মন্ত্রীর নাম ছিল আমান। তার বুদ্ধি শুনে ফেরাউন ঘোষণা করে দিলেন জীবনে চাইলে এসব পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করবে সকলকে মৃত্যুদণ্ড দেবেন। কিছুদিন এভাবে কাটতে কাটতে বনি ইসরাইলে পুত্র সন্তানের সংখ্যা হ্রাস পেতে থাকে।
বর্ণিত আছে যে, যে বছর হত্যার আদেশ রোহিত ছিল সে বছরেই হযরত হারুন আলাইহিস সালাম জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আর বছর হত্যার আদ বলবত ছিল সে বছরে হযরত মুসা আলাই সালাম জন্মগ্রহণ করেন। মুসা আলাই সালাম এর বাবা মা সকালের কাছে থেকে বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করেন। কাবেলা নামক এক মহিলা যে মুসা মাতার প্রহরী রূপ নিযুক্ত ছিল।জন্মকালীন সময়ে সে মুসার রূপ লাবণ্য দেখে মুগ্ধ হয়ে গেল। এবং শিশুটির প্রতি তার স্নেহ মায়া সৃষ্টি হয়। এইজন্য তিনি বললেন যে চিন্তা করোনা আমি এই বিষয়ে প্রকাশ করবো না।
এর ফলে মুসা আঃ সালামের মা তাকে তিন চার মাস গোপনে পালন করেন। কিন্তু একসময় সে চিন্তিত হয়ে পড়েন, যদি তার সন্তান জন্মের সংবাদ কোনভাবেই ফেরাউনের কাছে পৌঁছে যায় তাহলে তার সন্তানের জীবন হুমকির মুখে পড়ে যাবে। আর এই কারণে তার স্বামীর সঙ্গে আলোচনা করে একটি ঝুড়িতে করে মুসা আলাইহিস সালামকে নীলনদের ভাসিয়ে দেন। আল্লাহ তাআলার ইচ্ছায় সেই ঝুড়িটি ফেরাউনের বাগানের পাশে গিয়ে বাঁধে।
আরো পড়ুন হযরত নূহ আলাই সালাম এর সংক্ষিপ্ত জীবনী
ফেরাউনের প্রহরীরা ফেরাউনের স্ত্রীর নিকট তাকে নিয়ে যায়। মুসা আলাই সালাম এর সৌন্দর্য দেখে ফেরাউন স্ত্রী তাকে খুব পছন্দ করে ফেলে। এবং তাকে মাতৃস্নেহে লালন পালন করতে শুরু করে। কিন্তু ফেরাউন সেই বাচ্চাটিকে হত্যা করতে চাইলেন তখন ফেরাউনের স্ত্রী বাচ্চাটিকে হত্যা করতে দিলেন না। তার স্ত্রীর কারণে ফেরাউন তাকে হত্যা করতে ব্যর্থ হয়।
কিন্তু শিশু মুসা কারো দুগ্ধ পান করছিল না। এজন্য ফেরাউনের স্ত্রী অর্থাৎ আছিয়া ঘটনা ক্রমে মশাকে দুধ পান করানোর জন্য তার মাকেই নিয়ে আসা হয়। কিন্তু তার মা বিষয়টি গোপন রেখেই তার নিজের বাচ্চাকে দুধর্য পান করান। এইভাবে আল্লাহ তা'আলা শিশু কাল মুসা আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ফেরাউনের হাত থেকে রক্ষা করেন।
মুসা আলাই সালাম যখন প্রাপ্তবয়স্ক হন তখন একদিন তার আসল জন্ম পরিচয় তার মার কাছ থেকে তিনি জানতে পারেন। এরপর থেকে তিনি বনী ইসরাঈলের লোকদের প্রতি ভালোবাসা অনুভব করেন। সে সময় বনি ইসরাইলের লোকদের প্রতি মিশরের লোকজন অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করত এবং সুযোগ পেলে তাদের ওপর বিভিন্ন ধরনের অত্যাচার শুরু করতো।
একদিন মুসা আলাই সাল্লাম পায়চারি করার সময় দেখতে পেলেন যে দুইজন লোক মারামারি করছে। তাদের মধ্যে একজন ছিল মিশরের এবং আরেকজন ছিল বনি ইসরাঈলের। তখন মুসা আলাই সাল্লাম চাইলেন যে মিশরের লোকটিকে আঘাত করে সে বনি ইসরাঈলের লোককে উদ্ধার করবেন। কিন্তু ভাগ্যক্রমে মুসা আলাই সালাম এর একটি ঘুসি খেয়ে লোকটি মারা যান।
এই ঘটনা চারিদিকে ছড়াছড়ি হয়ে যায়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মুসা আলাই সালাম কে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। এই ঘটনার কবলে পড়ে মুসা আলাই সালাম মিশর ত্যাগ করতে বাধ্য হন। সেটা যখন তিনি মিশর ছেড়ে চলে যাচ্ছিলেন তখন মানসিকভাবে তিনি উদ্বিগ্ন এবং অশান্তি অনুভব করেন। তখন তিনি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন। প্রার্থনা করার ফলে তিনি মানসিক প্রশান্তি পান এবং উদ্বিগ্নতা থেকে মুক্তি পান।
এ যাত্রা সময় মুসা আলাই সালামের খাদ্য হিসেবে ছিল বৃক্ষ পত্র। হযরত ইবনে আব্বাস বলেন এটি ছিল মুসা আলাই সাল্লাম এর জন্য সর্বপ্রথম পরীক্ষা। যখন হযরত মুসা আলাই সালাম মাদিয়ানীর একটি মরুদ্যানে পৌঁছ তখন তিনি খুব ক্লান্ত অনুভব করেন এবং পিপাসিত হয়ে পড়েন। পিপাসায় কাতর হয়ে তিনি পানির খোঁজ করতে লাগলেন। কিন্তু ঘটনা ক্রমে তার সাথে দেখা হয়ে যায় শুয়াইব আলাইহিস সালাম এর দুই কন্যার সাথে।
মুসা আলাই সালাম কে তারা কূপ থেকে পানি উত্তোলন করে তার তৃষ্ণা নিবারণের সাহায্য করেন। এরপর তারা মুসা আলাই সালাম কে তাদের শুয়াইব আলাই সাল্লাম এর কাছে নিয়ে যান। মুসা আলাই সালাম এর ব্যবহারে শুয়াইব আলাই সাল্লাম এবং তারপর কন্যারা উভয়ের সন্তুষ্ট ছিলেন। মুসা আলাই সালাম তখন সবাই বলে ইসলামকে সকল ঘটনা খুলে বলেন। এরফলে শুয়াইব আলাই সালাম মুসা আলাই সালাম কে তার নিজ গৃহে রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
এবং তাকে এটিও বললেন যে সে যদি চায় তাহলে সে তার কন্যাদয়ের দুজনের মধ্যে একজনকে বিয়ে করতে পারে। কিন্তু এর বদলে তাকে ৮ থেকে ১০ বছর তার বাড়িতে পশুচারণ করতে হবে। হযরত মুসা আলাই সালাম তার প্রস্তাবে রাজি হন এবং দশ বছর কাজ সম্পন্ন করার পর তার স্ত্রীকে নিয়ে মিশরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। ফিরে আসার পথে যখন তিনি তোর পর্বতে অবস্থান নেন রাত্রি কাফনের জন্য তখন প্রচন্ড শীত অনুভব হচ্ছিল। এবং তার স্ত্রীর প্রসব বেদনা শুরু হয়ে যায়। তখন মুসা আলাই সাল্লাম কবল থেকে আত্মরক্ষার্থে আগুন চালাতে চাইলেন। কিন্তু তিনি আগুন জ্বালাতে ব্যর্থ হলেন।
হঠাৎ করে তিনি এক সময় দেখলেন যে, তোর পর্বতের কোন এক জায়গায় আগুন জ্বলছে কিন্তু সেটা প্রকৃতপক্ষে আগুন ছিল না। সেটি ছিল আল্লাহর নূর। মুসা আলাই সালাম আল্লাহর নূরকে আগুন ভেবে তা নিতে অগ্রসর হলেন। কিন্তু তিনি সেই স্থানে যাওয়ার পর একটি অবিশ্বাস্যকর ঘটনা দেখলেন। তিনি দেখলেন যে এই আগুনটি জ্বলছে একটি বৃক্ষের উপরে। কিন্তু আশ্চর্যকর বিষয় হচ্ছে যে বৃক্ষের পাতা বা ডালপালা কিছুই পুড়ছে না। বরং আগুনের কারণে বৃক্ষের উজ্জ্বলতা সজীবতা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে।
যখন মুসা আলাই সাল্লাম আগুন ভেবে তা নিতে যান তখন একটি গায়েবী আওয়াজ শোনা যায়। আওয়াজটির সারমর্ম ছিল এই যে 'যে বস্তুকে তুমি আগুন মনে করছ সেটি আগুন নয় এটা আল্লাহতালার জ্যোতি 'সে সময় হযরত মুসা আলাই সালাম জানতে চাইলেন আমি স্বয়ং আল্লাহর কালাম শুনছি আপনার প্রেরিত কোন ফেরেশতার কথা শুনছি। তখন আওয়াজে ভেসে আসে যে আমি তোমার সাথে স্বয়ং কথা বলছি।
সূরা ত্বাহার ১২ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন 'তুমি জুতা খুলে ফেলো তুমি পবিত্র উপত্যকার তোয়ায় আছো' সূরা ত্বয় আল্লাহ তাআলা হযরত মুসা আলাই সাল্লাম কে তাওহীদ রিসালাত এবং পরকাল সম্পর্কে শিক্ষা দিয়েছেন। এরকম বাণীর মধ্যেই হযরত মুসা আলাই সাল্লাম নবুয়ত তথা সালাতের সৌভাগ্য অর্জন করেন।
এরপর হযরত মুসা আলাই সালাম তার বংশে তথা বনী ইসরাইলে ফিরে সকলকে ইসলামের দাওয়াত দিতে থাকেন। বনি ইসরাইল ছাড়াও অনেকেই তার অনুসারী হিসাবে নিজেকে সমর্থন করেন। সে সময় মিশরে প্রচলন ছিল যাদুবিদ্যার। যার ফলে ফেরাউনের রাজা বাদশারা নিজেদেরকে খোদা হিসাবে দাবি করত।
আল্লাহতালা তখন ঐসব করতে যাদু বিদ্যা প্রতিহত করার জন্য মুসা আলাই সাল্লাম এর লাঠিতে একটি শক্তি দিয়ে দিলেন। যে যখনি লাঠিটি মাটি স্পর্শ করবে তখনই সেটি সাপ হয়ে যাবে। এর ফলে তিনি সব ধরনের বড় বড় জাদুকর কে প্রতিহত করেন। এর ফলে সময়কার বড় বড় যাদুকররা ও মুসা আলাই সাল্লাম এর জাদু দেখে পরাজয় গ্রহণ করে তার দেখানো ধর্ম অনুসরণ করতে লাগলো। যার ফলে ফেরাউন মুসা আলাই সালাম এর প্রতি ভীষণভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে যান। তাকে মেরে ফেলার জন্য তিনি সব ধরনের প্রচেষ্টা করতে থাকেন।
মুসা আলাই সালাম তখন মিশর ত্যাগের অনুমতি চাইলেন। ফেরাউন তাকে অনুমতি দিলেও পরে তাকে হত্যা করার জন্য সে সাহস হইলো নিয়ে যান। মুসা আলাই সালাম তার সঙ্গীদের নিয়ে যখন লোহিত সাগরের নিকট পৌঁছালেন তখন তার অনুসারীরা অত্যন্ত চিন্তা গ্রস্ত হয়ে পড়লেন এই ভেবে যে ফেরাউন তাদেরকে ধ্বংস করে ফেলবে।
তখন মুসা আলাই সালাম আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করলেন। আল্লাহতায়ালা তখন তাকে বললেন যে 'তোমার হাতে যে লাঠির আছে সে লাঠি দিয়ে পানিতে আঘাত করো মুসা আলাই সাল্লাম আল্লাহর কথা অনুযায়ী পানিতে আঘাত করলেন। এবং সাথে সাথে পানির মধ্যে দিয়ে অলৌকিকভাবে একটি রাস্তা তৈরি হয়ে গেল। তখন মুসা আলাই সাল্লাম তার অনুসারীদের নিয়ে সাগর পার হতে লাগলো। ফেরাউন এবং তার দলবল তাদের পেছনে ছিল।
মুসা আলাই সাল্লাম যখন তার অনুসারীদের নিয়ে সাগর পার হয়ে গেলেন তখন ফেরাউন এবং তার সৈন্যরা সাগরের মাঝখানে অবস্থানরত ছিল। আল্লাহর আদেশ মুসা আলাই সালাম পুনরায় লাঠি দিয়ে পানিতে আঘাত করলেন। যার ফলে পানিতে যে অলৌকিক রাস্তা তৈরি হয়েছিল তা পুনরায় মিশে গেল। যার ফলে ফেরাউন এবং তার দলবল পানিতে ডুবে গেল।
এরপরে মুসা আলাই সালাম মরুভূমির বিভিন্ন উপত্যকা পাড়ি দিয়ে সর্বশেষ জর্ডান নদীর তীরে একটি রাজ্যে পৌঁছান। সেই রাজ্য পার হলেই প্যালেস্টাইন। জর্ডানের নিকট একটি পাহাড়ের উপরে উঠলেই দেখা যায় প্যালেস্টাইনের সবুজ প্রান্তর। এদিকে মুসা আলাই সাল্লাম উদ্ভ্রিত হয়ে উঠেছিলেন প্যালেস্টাইনের মাটিতে পা দেওয়ার জন্য। এমন সময় আল্লাহর দৈবানি শুনতে পেলেন তিনি। আল্লাহ তাআলা তাকে বললেন 'হে আমার ভক্ত তোমার পৃথিবী ছাড়বার সময় হয়ে গেছে তুমি প্রস্তুত হও '।
এরপরে হযরত মুসা আলাই সালাম সকল ইহুদীকে ডেকে আল্লাহর আদেশের কথা বলেন। সকলের সামনে তার দায়িত্বভার ত্যাগ করে যশোয়ারের উপর অর্পণ করলেন তিনি। এবং সকলকে উপদেশ দিয়ে তিনি প্রার্থনায় বসলেন বুঝতে পারলেন তার সময় শেষ হয়ে গেছে। এরপরে তিনি এগুলোকের মায়া ত্যাগ করে আল্লাহর চূড়ান্ত সান্নিধ্য লাভ করেন।
একটি বিষয় আপনাদেরকে জানিয়ে রাখতে চাই হযরত মুসা আলাই সাল্লাম এর জীবনে অত্যন্ত ঘটনা বহুল। তাই অনেক মজিদের ঘটনাই এই জীবনেতে স্কিপ করা হয়েছে যেন আপনাদের পড়তে বিরক্ত না লাগে। এছাড়াও আমার অন্যান্য ব্লগে নবীদের জীবনী সম্পর্কে আরো কিছু লিখা আছে। যা আপনাদের পড়তে ভালো লাগবে বলে আমি মনে করি।
লেখক এর মন্তব্যঃ
আপনাকে যদি আমি উপযুক্ত তথ্য দিতে পারি তাহলে আপনি আপনার সকল বন্ধুদের সাথে এ বিষয়টি শেয়ার করবেন এবং ভালো লাগলে আমার ব্লগটি নিয়মিত ভিজিট করবেন। আপনাদের যদি আমার লেখা কনটেন্ট পড়ে ভালো লাগে। তাহলেআমার ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করবেন। আপনাদের জন্য আমি আরো নতুন নতুন বিষয়গুলো তুলে ধরব আপনাদের সামনে। সবাই ভালো থাকবেন। ফি আমানিল্লাহ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url