হযরত নূহ আলাই সালাম এর সংক্ষিপ্ত জীবনী
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
রাসূলদের মধ্যে সর্বপ্রথম রিসালাতের দায়িত্ব পাণ হযরত নূহ আলাইহিস সালাম। যাকে মানবজাতির দ্বিতীয় পিতা বলা হয়। হযরত আদম আলাই সাল্লাম এর সাথে নুহ আলাই সালাম এর ব্যবধান ছিল প্রায় ১০ শতাব্দী। হযরত নূহ আলাই সালাম এর জন্ম বর্তমান ইরাকের মুসুন নগরীর উত্তরপ্রান্তে। অনেকের মতে নুহ আলাই সালাম এর নাম ছিল আব্দুল গাফফার, আবার অনেক ইয়েসগুর,আবার অনেকের মধ্যে আব্দুল জব্বার। কেউ কেউ তার নাম ইদ্রিস ছিল বলেও মত প্রকাশ করেন।
হযরত নূহ আলাইহিস সালাম এর চারজন পুত্র ছিল। সাম, হাম ইয়াফিজ ও ইয়াম। হযরত আদম আলাই সাল্লাম এর দুনিয়াতে অবতরণের পর মানুষের মধ্যে শিরক এবং কুফর ছিল না বললেই চলে। তখন মানুষ তার নিজের মানবিক কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতো। আস্তে আস্তে মানুষের মধ্যে হিরো কুফারের আবির্ভাব ঘটে। তারা মহান আল্লাহ তায়ালাকে অস্বীকার করতে থাকে।
বিভিন্ন ধরনের মূর্তিকে পূজা করে। নানা গোত্রের মানুষ কবর এবং মাটির মূর্তি বানিয়ে তার পূজা করা শুরু করে। কালক্রমেই তাদের কাজের এইসব পূজার ধরন আরো বাড়তে থাকে। এই পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে এই জাতিকে গোমরা থেকে মুক্তি করার জন্য আল্লাহতালা হযরত নুহ আলাই সালাম কে প্রেরণ করেছিলেন। পবিত্র কুরআনে এ ব্যাপারে অনেক আয়াত নাজিল হয়েছে।
এইসব আচরণের জন্য আল্লাহ তায়ালা পূর্বে অনেক জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। কিন্তু এবার তাদের সতর্ক করার জন্য আল্লাহ পাক হযরত নূহ আলাই সালাম কে প্রেরণ করেন। হযরত নূহ আলাই সালাম তাদের বলেন হে আমার জাতি আমি তোমাদের জন্য স্পষ্ট সতর্ককারী। তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, আমার অনুসরণ করো এবং আল্লাহর এবাদত কর। এতে আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন।
দিনরাত প্রকাশে গোপনে সকল ভাবি মধ্যে টাওয়ার দিতে থাকেন নুহ আলাই সালাম। আল্লাহর বিভিন্ন পরিচয় তিনি তাদের সামনে বর্ণনা করেন। কিন্তু কেউ তার কথা শুনলো না তারা কানে আঙ্গুল দিত তার কথা শুনে সেখান থেকে পালিয়ে যেত অথবা তাকে মন্দ কথা বলে বিরক্ত করতো। একাধারে ৯০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি উম্মতের দাওয়াত দিয়েছিলেন।
একবার গোত্রের লোকেরা বলল তুমি যদি দাওয়াত দেওয়া থেকে বিরত না হও তাহলে পাথর মেরে তোমার মস্তক চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিব। এরপর প্রতিদিনই তিনি দাওয়াত দিতে থাকেন এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে। তবুও তাদের অন্যান্য সম্প্রদায়ের ব্যভিচার অন্যায় ভাবির উপর তাদের অত্যাচার আরো বেড়ে যেতে থাকে।এরকম করতে করতে এক সময় তাদের নাই এক্কেবারে বৃদ্ধি পেয়ে গিয়েছিল। তাদের পাপ আচরণ ষোল কারাই মরে গেছিল।
এই দীর্ঘ সময়ে ৭০ থেকে ৮২ জন আল্লাহর উপর ঈমান এনেছিল। এর মধ্যে আল্লাহ তাআলা তাকে জানিয়ে দেন। ইতোমধ্যে তোমার গরমে যারা আমার উপর ঈমান এনেছে ধারা ব্যতীত আর অন্য কেউ ঈমান আনবে না। তখন নুহ আলাই সালাম আল্লাহকে বলেন হে আমার পালন আমাকে সাহায্য করুন কেননা আমাকে মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করেছে। আপনি এ কওমের লোকদের ওপর চূড়ান্ত ফয়সালা করুন এবং মুমিনদের রক্ষা করুন।
এরপর লোকাল আসলাম ওইসব জাতির উপর চূড়ান্তভাবে বদদোয়া করলেন এবং আল্লাহ তাআলা তার দোয়া কবুল করলেন। এবং নমুনাও বলে দিলেন। আল্লাহ তাআলা তাকে একটি কিস দিয়ে বা নৌকা বানিয়ে রাখতে বললেন। আরো বললেন যে দেখবে চুল্লি থেকে পানি উঠছে এই দিন প্লাবন হবে। তিনি নৌকা বানাতে বলেছেন কারণ যেন নবী এবং তার উম্মতেরা এই প্লাবন থেকে রক্ষা পায়।
আল্লাহর নির্দেশে নূহ আলাইহিস সালাম নৌকা দৌড়ের কাজ শুরু করে দিলেন। এই ঘটনা তিনি কওমের লোকদের জানিয়ে দিলেন। এর ফলে কমেন্ট লোকেরা তাকে আরও তীব্রভাবে তিরস্কার করতে লাগলো। তারা বলতে লাগলো এই পাগল এত বড় নৌকা বানাচ্ছে কেন কোথাও পানি নেই এই মরুভূমিতে আবার কিভাবে বন্যা হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।
এই কিস্তিতে ৩০০ গজ লম্বা ৫০ গজ প্রস্থ এবং ৩০ গজ উচ্চতা ছিল। নৌকা নির্মাণ শেষে কাফের গান দলে দলে এসে সেই নৌকাতে পায়খানা করতে লাগলো। আল্লাহ তাআলা তাকে বললেন আপনি চিন্তা করবেন না। সর্বশেষ একজন বুড়ি আসলো সেখানে পায়খানা করতে সে ছিল রোগে আক্রান্ত একজন বুড়ি। হঠাৎ সে পা পিছলে এই পায়খানার ভিতরে পড়ে যান। এবং অনেকক্ষণ ধরে হাবুডুবু খান।
কিন্তু যখন সে বুড়ি উঠে আসে তখন দেখা যায় শুয়ে পড়ে একেবারে সুস্থ হয়ে গেছে এবং তার বয়সও হয়ে গেছে ১৬ বছরের যুবতীর নেই। এই ঘটনা দেখে কাফেররা সকলেই সেই পায়খানার ভিতরে গিয়ে ডুবাডুবি করতে লাগল। এবং যারা অসুস্থ ছিল তারা ঔষধ হিসেবে সেই পায়খানা গুলো বাসায় নিয়ে গেল। এরকম করতে করতে এমন এক সময় আসলো যখন জাহাজের পায়খানা গুলো সব শেষ হয়ে গিয়েছিল।
পায়খানার এসব অবিশ্বাস্য কথা শুনে বাহির দেশ থেকেও অনেক লোক আসতে লাগল। অবশেষে তারা পায়খানা না পাওয়ার কারণে জাহাজটিকে ধুয়ে মুছে সাফ করে দিল। জাহাজটি এক্কেবারে চকচকে হয়ে গিয়েছিল। এই ঘটনার পর প্লাবন শুরু হতে লাগে।
এখন হযরত নূহ আলাইহিস সালাম তাদের উম্মতের নিয়ে নৌকাতে উঠে বসেন। এবং আল্লাহর হুকুমে পৃথিবীর সকল জীবজন্তু থেকে এক জোড়া করে জীবজন্তু তার নৌকাতে তুলে নেন। তারা যেন পরে পৃথিবীতে বংশবিস্তার করতে পারে তাই জন্য। তার নৌকাটি ছিল সাধারণত তিন তলা বিশিষ্ট। নিচের তলায় পশুপাখি, দ্বিতীয় তলায় পুরুষেরা, এবং তৃতীয় তালায় মহিলার অবস্থান করবে। একটানা ৪০ দিনে প্লাবন থাকে। রজব মাসের ১০ তারিখ থেকে মহরম মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত প্লাবন হয়। সেদিন এ জাহাজটির মাটি স্পর্শ করে।
লেখক এর মন্তব্যঃ
আপনাকে যদি আমি উপযুক্ত তথ্য দিতে পারি তাহলে আপনি আপনার সকল বন্ধুদের সাথে এ বিষয়টি শেয়ার করবেন এবং ভালো লাগলে আমার ব্লগটি নিয়মিত ভিজিট করবেন। আপনাদের যদি আমার লেখা কনটেন্ট পড়ে ভালো লাগে। তাহলেআমার ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করবেন। আপনাদের জন্য আমি আরো নতুন নতুন বিষয়গুলো তুলে ধরব আপনাদের সামনে। সবাই ভালো থাকবেন। ফি আমানিল্লাহ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url