কাঁঠালের ১৫ টি উপকারিতা

আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনাদের জানাবো কাঁঠাল খাওয়ার কিছু উপকারিতা। আপনাদের আজ আমি এমন কিছু উপকারিতা সম্পর্কে জানাবো, যা শুনে আপনি আশ্চর্য হয়ে যাবেন। বাংলাদেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল। কৃষি তথ্য সার্ভিসের বর্ণনা অনুযায়ী, কাঁঠালের প্রচুর এনার্জি রয়েছে। কাঁঠালের শর্করার পরিমাণ বেশি। কাঁঠাল হলো গ্রীষ্মকালীন ফল। পাকা কাঁঠালের প্রতি ১০০ গ্রামে রয়েছে ৯০ কিলো ক্যালরি শক্তি। এবং খনিজ লবণের পরিমাণ প্রায় ০.৯ গ্রাম। কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে আমিষ, শর্করা ও ভিটামিন রয়েছে।

এইসব উপাদান প্রচুর পরিমাণে থাকায় তা মানব দেহের জন্য বিশেষ উপকারী। এছাড়াও কাঁঠালে রয়েছে থায়ামিন রিবোফ্লাভিন ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম সোডিয়াম আয়রন জিংক এবং নায়াসিন সহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান। কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ আছে যা রাতকানা রোগের প্রতিরোধ করে। এছাড়াও কাঁঠালের থাকা পুষ্টিগণের কারণে তো উচ্চচাপের উপশম হয়।
শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত সকল ধরনের মানুষের কাছে কাঁঠালের উপকারী ফল। গর্ভবতী মহিলা এবং শিশু সন্তানের মায়ের জন্য কাঁঠাল একটি অত্যন্ত উপকারী ফল। তাই বাসাবাড়ি আশেপাশে বেশি বেশি কাঁঠাল গাছ লাগানো প্রয়োজন। যাতে আমাদের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়। কাঁঠালের যেই ১৫ টি উপকারিতা জানলে আপনারা অবাক হবেন আসুন সেগুলো সম্পর্কে জেনে নিই।

কাঁঠালের ১৫ টি উপকারিতা

  • কাঁঠালের চর্বির পরিমাণ অত্যন্ত কম, এই ফলটি খেলে শরীরের ওজন বাড়ার কোনো আশঙ্কা থাকে না। আপনি যতটুকুই কাঁঠাল খান না কেন তাতে আপনার ক্ষতির আশঙ্কা অত্যন্ত কম থাকে। তবুও অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না।
  • কাঁঠাল পটাশিয়াম এর একটি ভালো উৎস। পটাশিয়াম শরীরের একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান। পটাশিয়াম দেহের এমন একটি উপাদান, যা শরীর থেকে কমে গেলেও মহা সমস্যা এমনকি শরীরে বেশি পরিমাণে পটাশিয়াম থাকলেও তা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
  • কাঁঠালের আরেকটি বিশেষ উপাদান হলো, এতে ভিটামিন এ আছে যা রাতকানা রোগকে প্রতিরোধ করে। এমনকি ভিটামিন এ জনিত অন্যান্য সমস্যা সমাধানে কাঁঠাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • কাঁঠালের অন্যতম একটি উপাদান হল ভিটামিন সি। ভিটামিন সি চর্মরোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। প্রাকৃতিকভাবে মানবদেহে ভিটামিন সি উৎপন্ন হয় না। তাই অন্যান্য যে কোন ফলমূল খেয়ে ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করতে হয়। দিনে চার থেকে পাঁচ কোয়া কাঁঠাল খেলে শরীরে ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ হয়।
  • কাঁঠালের রয়েছে ফাইটো নিউট্রিয়েন্ট, যা দেহের বিভিন্ন রোগ যেমন আলসার, ক্যান্সার, চর্মরোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং বার্ধক্য প্রতিরোধে সহায়তা করে।
  • কাঁঠালের রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা আমাদের দেহকে ছোট ছোট রোগ যেমন সর্দি-কাশি হালকা জ্বর থেকে রক্ষা করে।
  • টেনশন দুশ্চিন্তা এবং নার্ভাসনেস কমাতে কাঁঠাল অত্যন্ত কার্যকরী।
  • কাঁঠাল বদহজম রোধ করে। তাই যাদের পেটের সমস্যা রয়েছে তাদের কাঁঠাল খেলে হলো প্রকার সমস্যার হতে হবে না। বরঞ্চ কাঁঠাল পেটের জন্য অত্যন্ত উপকারি।
  • কাঁঠাল গাছের শেকর হাঁপানির উপশম করে। এর ব্যবহারের প্রক্রিয়া হলো সেদ্ধ করে তার ঘ্রাণ নেওয়া, বা পানি ব্যবহার করা।
  • কাঁঠালের শেকড় চর্ম রোগের জন্য অত্যন্ত ভালো একটি উপাদান। এছাড়াও জ্বর এবং ডায়রিয়া নিরাময় করে থাকে কাঁঠালের শেকর।
  • কাঁঠালে রয়েছে খনিজ উপাদান। যেমন ম্যাঙ্গানি যা রক্তে শর্করার পরিমাণ সঠিক রাখে।
  • কাঁঠালের বিদ্যমান ম্যাগনেসিয়াম ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠন ও দাঁত শক্ত করতে সহায়তা করে।
  • কাঁঠালে রয়েছে ভিটামিন বি সিক্স যার হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
  • ছয় মাস বয়স পর শিশুকে মায়ের দুধের পাশাপাশি কাঁঠালের রস খাওয়ালে পুঁচোর ক্ষুদা নিবারণ হয়। এবং শিশু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
  • চিকিৎসকের মতে গর্ভবতী মহিলাকে দৈনিক ২০০ গ্রাম পাকা কাঁঠাল খেলে সেই মহিলা এবং তার শিশু বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়।
                                               

কাঁঠাল খাবার পর যে চারটি খাবার একেবারেই খাবেন না

কাঁঠাল অত্যন্ত সুস্বাদু একটি ফল। অনেক ব্যক্তি রয়েছে যারা কাঁঠাল খেতে অত্যন্ত পছন্দ করে। একেবারেই তারা ৫০ থেকে ৬০ টি কোয়া এক নিমিষেই খেয়ে ফেলে। আগেই বলেছি কাঁঠাল শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তবুও সব জিনিসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ রয়েছে। অত্যন্ত বেশি কাঠাল খেলে তা শরীরের জন্য ক্ষতি সাধন করে।
  1. পেপেঃ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন কাঁঠাল খাওয়ার পর পেঁপে খাওয়া যাবেনা। এদের চর্মরোগ বা এলার্জি দেখা দিতে পারে। এছাড়াও পাতলা পায়খানার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই জন্য কাঁঠাল খাওয়ার পর সাথে সাথেই পেঁপে খাওয়া যাবেনা।
  2. দুধঃ কাঁঠাল খাবার পরে কোনভাবেই আপনি সঙ্গে সঙ্গে দুধ খাবেন না। অনেকেই দুধ ভাত দিয়ে কাঁঠাল খেতে অত্যন্ত পছন্দ করে। যদি না জেনে আপনিও দুধ খাওয়ার পর কাঁঠাল খান কিংবা দুধ ভাত দিয়ে কাঁঠাল খান তাহলে আজ থেকেই এই অভ্যাসটি পরিত্যাগ করুন। দুধ আর কাঁঠাল একসাথে খেলে পেট ফুলতে পারে। এছাড়াও চর্মে সাদা রোগ বা ধবল রোগ হতে পারে।
  3. ঢেঁড়স বা ভেন্ডিঃ আপনি যদি কাঁঠাল খাওয়ার পরে ঢেঁরস খান তাহলে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন উনার পায়ে ব্যথা হতে পারে। যেটি এখনকার বেশিরভাগ মানুষেরই একটি সমস্যা।
  4. পানঃ কাঁঠাল খাবার পর আপনি ভুলেও পান খাবেন না। এটি একটি মারাত্মক ক্ষতির কারণ। কাঁঠাল খাওয়ার পরে কেউ যদি পান খায় তাহলে সে মৃত্যুর মুখোমুখি হতে পারে।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা বলেছেন "তোমাকে কোন কাজ ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয় এমন কোন কাজে নিজেকে ঠেলে দেওয়া যাবে না"আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে এই সব বিষয় থেকে বিরত রাখুক 'আমিন'।

লেখক এর মন্তব্যঃ

অন্যান্য খাবারের চেয়ে ফলমুলে বলে বেশি পরিমাণে পুষ্টিমান বিদ্যমান থাকে। কোন ফলে কি রকম পুষ্টিমান থাকে খাওয়ার আগে তা জেনে নেওয়া জরুরী। এবং কোন শরীরের জন্য ক্ষতিকর তাও জেনে রাখা প্রয়োজন। কিছু কিছু ফল রয়েছে যা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এইসব ফল সম্পর্কে জানার জন্য উপরে দেওয়া লিংকে ক্লিক করুন।
আপনাকে যদি আমি উপযুক্ত তথ্য দিতে পারি তাহলে আপনি আপনার সকল বন্ধুদের সাথে এ বিষয়টি শেয়ার করবেন এবং ভালো লাগলে আমার ব্লগটি নিয়মিত ভিজিট করবেন।আপনাদের যদি আমার লিখা পড়ে ভালো লাগে তাহলে ইচ্ছা হলে আমার ব্লগটি নিয়মিত পরিদর্শন করবেন। সকলে ভালো থাকবেন ফি আমানিল্লাহ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url