মটরশুটি ও বরবটির উপকারিতা,অপকারিতা এবং চাষ পদ্ধতি
আপনারা মটরশুটি ও বরবটির উপকারিতা চাষ পদ্ধতি এবং মটরশুটি ও বরবটির সম্পর্কে অন্যান্য কিছু তথ্য জানতে চেয়েছেন। আজকের এই আর্টিকেলে আমি মটরশুটি ও বরবটির সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরব আশা করব আপনারা যা চাইবেন উপযুক্ত তথ্য আমি আপনাদের দিতে পারব।
অনেকেই মটরশুটি ও বরবটি খেতে অনেক পছন্দ করে। এটি কাঁচাপাকা রেধে সব ভাবে খাওয়া যায়। এবং সব ভাবে খাওয়ায় এতে যত পুষ্টিমান রয়েছে সবগুলোই আপনার শরীর ভালো প্রভাব ফেলে যার ফলে এইসব পুষ্টিগনিত রোগ থেকে আপনারা মুক্তি পাবেন। মটরশুটিতে প্রোটিন, উচ্চমাত্রায় কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, মিনারেল এবং দ্রবনীয় ভিটামিন রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের শিমের বিচির কথাও উঠে এসেছে এই তালিকায়।
খাওয়ার উপকারিতা
মটরশুটি খাওয়ার উপকারিতা
মটরশুটি (পিস) স্বাস্থ্যকর খাবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে পারে। এটি অনেক পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং নানা ধরনের উপকারিতা প্রদান করে। এখানে কিছু প্রধান উপকারিতা উল্লেখ করা হলো:
- প্রোটিনের উৎস: মটরশুটি একটি ভালো প্রোটিনের উৎস, বিশেষ করে যারা মাংস খান না তাদের জন্য। প্রোটিন আমাদের শরীরের কোষ ও টিস্যু পুনর্গঠনে সাহায্য করে।
- ফাইবার সমৃদ্ধ: মটরশুটি উচ্চ ফাইবারে ভরপুর, যা হজম প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ফাইবার কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতেও সাহায্য করতে পারে।
- ভিটামিন এবং খনিজের উৎস: এতে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং আয়রন থাকে, যা শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রমে সহায়ক।
- কম ক্যালোরি এবং চর্বি: মটরশুটির ক্যালোরি এবং চর্বির পরিমাণ কম, তাই এটি ওজন কমানোর বা ধরে রাখার জন্য একটি ভাল খাদ্য।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণাবলী: মটরশুটিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা শরীরকে ফ্রি র্যাডিক্যালস থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং কোষের ক্ষতি কমায়।
- হার্টের স্বাস্থ্য: মটরশুটি হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে কারণ এতে উচ্চমাত্রার ফাইবার এবং পটাসিয়াম থাকে যা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
- শক্তি বৃদ্ধি: মটরশুটিতে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ এবং প্রোটিন থাকায় এটি শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
এভাবে, মটরশুটি একটি পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা প্রদান করতে পারে। আপনি চাইলে আপনার খাবারের তালিকায় মটরশুঁটির একটি তালিকা তৈরি করতে পারেন। যার ফলে আপনার কাছে মটরশুটি প্রিয় একটি খাদ্য হয়ে উঠবে।
বরবটি খাওয়ার উপকারিতা
বরবটি (বা বরবটি) একটি পুষ্টিকর শাকসবজি যা খাদ্য তালিকায় যুক্ত করলে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করতে পারে। নিচে বরবটির কিছু প্রধান উপকারিতা উল্লেখ করা হলো:
- পুষ্টির ভাণ্ডার: বরবটিতে প্রচুর ভিটামিন, বিশেষ করে ভিটামিন এ, সি, এবং ক্যালসিয়াম, আয়রন, এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকে। এই উপাদানগুলো শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রমে সহায়ক।
- ফাইবার সমৃদ্ধ: বরবটিতে উচ্চ পরিমাণে ফাইবার থাকে যা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সহায়ক।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণাবলী: এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান শরীরকে ফ্রি র্যাডিক্যালস থেকে রক্ষা করে এবং কোষের ক্ষতি কমাতে সাহায্য করে।
- হৃদরোগ প্রতিরোধ: বরবটিতে প্রচুর পটাসিয়াম থাকে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
- প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: বরবটিতে থাকা ভিটামিন সি এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- মেটাবলিজম উন্নতকরণ: বরবটিতে উপস্থিত বিভিন্ন ভিটামিন এবং খনিজ মেটাবলিজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে এবং শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক।
- ত্বকের স্বাস্থ্য: ভিটামিন এ এবং সি ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়ক, ত্বককে উজ্জ্বল এবং তরুণ রাখে।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ: বরবটি কম ক্যালোরি এবং চর্বি সমৃদ্ধ, তাই এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে এবং সুষম খাদ্যের অংশ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
বরবটি নিয়মিত খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে শরীরের বিভিন্ন দিক থেকে উপকার পাওয়া যেতে পারে। তবে, বিশেষভাবে স্বাস্থ্য সমস্যার ক্ষেত্রে, একজন পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
মটরশুটি (Green Pea): বৈজ্ঞানিক নাম: Pisum sativum এবং বরবটি (Ridge Gourd): বৈজ্ঞানিক নাম: Luffa acutangula কাঁচা এবং পাকা- দুই ধরনের মটরশুটি ও বরবটি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। তবে পাকা মটরশুটি ও বরবটির তুলনায় কাঁচা মটরশুটি ও বরবটি বেশি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন বলে মতামত বিজ্ঞানীদের।
খাওয়ার নিয়ম
মটরশুটি খাওয়ার নিয়ম
মটরশুটি একটি পুষ্টিকর খাবার যা অনেকভাবে রান্না করা যায় এবং এর বিভিন্ন স্বাস্থ্য সুবিধা রয়েছে। তবে, মটরশুটি খাওয়ার জন্য কিছু সাধারণ নিয়ম অনুসরণ করা উচিত যাতে আপনি এর সমস্ত পুষ্টিগুণ লাভ করতে পারেন এবং হজমে কোনো সমস্যা না হয়। এখানে কিছু নির্দেশনা দেয়া হলো:
সঠিকভাবে রান্না করুন:
- তাজা মটরশুটি: যদি তাজা মটরশুটি ব্যবহার করেন, তাহলে প্রথমে মটরশুটিগুলো ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর রান্না করুন, কারণ কাঁচা মটরশুটিতে কিছু স্নেহ পদার্থ (এন্টি-নিউট্রিশনাল ফ্যাক্টর) থাকে যা রান্নার মাধ্যমে ধ্বংস হয়।
- শুকনো মটরশুটি: শুকনো মটরশুটি রান্নার আগে প্রায় ৮-১০ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এতে মটরশুটিগুলি নরম হবে এবং দ্রুত রান্না হবে। পানি ফেলে দিয়ে নতুন পানি দিয়ে রান্না করুন।
মটরশুটি রান্নার সময় পর্যাপ্ত পানি ব্যবহার করুন যাতে এটি সঠিকভাবে সিদ্ধ হয় এবং সঠিক টেক্সচার পায়।
রান্নার সময় সাবধানতা:
রান্নার সময় মটরশুটির স্বাদ এবং পুষ্টিগুণ ধরে রাখতে পরিমাণ মতো লবণ এবং মসলা ব্যবহার করুন। অতিরিক্ত মসলা বা লবণ ব্যবহার করবেন না।
ফাইবার গ্রহণের পরিমাণ মনিটর করুন:
মটরশুটি ফাইবার সমৃদ্ধ, তাই যদি আপনার ফাইবারে নতুন হয়, তাহলে অতিরিক্ত খাওয়ার পরিবর্তে ধীরে ধীরে পরিমাণ বাড়ান। এটা আপনার হজম ব্যবস্থাকে ধীরে ধীরে অভ্যস্ত করে তুলবে।
স্বাস্থ্যকর সংমিশ্রণ:
মটরশুটির সাথে প্রোটিন, শাকসবজি এবং গোটা শস্য যুক্ত করা হলে একটি সুষম খাবার হবে। উদাহরণস্বরূপ, মটরশুটি এবং বাদাম, দই অথবা অন্য কোনো প্রোটিন সোর্সের সাথে খেতে পারেন।
সঠিকভাবে সংরক্ষণ করুন:
রান্না করা মটরশুটি ফ্রিজে ৩-৪ দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। শুকনো মটরশুটি একটি শীতল, শুষ্ক স্থানে সংরক্ষণ করুন।
অতিরিক্ত খাওয়া এড়িয়ে চলুন:অতিরিক্ত মটরশুটি খাওয়া এড়িয়ে চলুন কারণ এতে কিছু লোকের গ্যাস বা bloating সমস্যা হতে পারে।
মটরশুটি একটি বহুমুখী উপাদান যা বিভিন্ন রান্নায় ব্যবহার করা যায় যেমন স্যুপ, সালাদ, চিলি, এবং স্টিউ। এগুলি নিয়মিত খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে আপনি ভালো স্বাস্থ্য উপকারিতা পেতে পারেন।
বরবটি খাওয়ার নিয়ম
বরবটি (বা বরবটি) খাওয়ার নিয়ম অনুসরণ করলে আপনি এর স্বাস্থ্য উপকারিতা সঠিকভাবে উপভোগ করতে পারবেন এবং রান্না করা সহজ হবে। বরবটির স্বাস্থ্যকর গুণাগুণ বজায় রাখার জন্য কিছু সাধারণ নিয়ম রয়েছে যা আপনাকে সহায়ক হতে পারে:
নিয়মিত এবং পরিমিত খাওয়া:
- মেয়াদোত্তীর্ণ না হওয়া: বরবটি নির্বাচন করার সময় তাজা এবং মেয়াদোত্তীর্ণ নয় এমন বরবটি বেছে নিন।
- পরিমিত পরিমাণ: দৈনিক খাদ্য তালিকায় সুষম পরিমাণে বরবটি রাখুন। সাধারণভাবে, সপ্তাহে ২-৩ বার খাওয়া উত্তম।
সঠিকভাবে প্রস্তুত করা:
- ধোয়া: বরবটি রান্নার আগে ভালোভাবে ধুয়ে নিন যাতে মাটির কণা এবং অন্যান্য অমেধ্য দূর হয়ে যায়।
- কাটা: বরবটির দুই প্রান্ত কেটে ফেলুন এবং মাঝের অংশ কাটতে পারেন, বিশেষ করে যদি এটি বড় এবং শক্ত মনে হয়।
রান্নার পদ্ধতি:
- সিদ্ধ করা: বরবটি সিদ্ধ করতে হলে, এটি ভালোভাবে সিদ্ধ হওয়া উচিত যাতে এটি নরম হয় এবং রান্নায় সহজ হয়। সাধারণভাবে, সিদ্ধ করতে ৮-১০ মিনিট লাগে।
- স্টিয়ার ফ্রাই: বরবটি স্টিয়ার ফ্রাই করতে পারেন তেলের সাথে, সাথে বিভিন্ন মসলা ও মাংসের সাথে মিশিয়ে।
- সুপ: বরবটি স্যুপে যোগ করে রান্না করতে পারেন যা পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু হয়।
স্বাস্থ্যকর সংমিশ্রণ:
- শাকসবজির সাথে: বরবটির সাথে অন্যান্য শাকসবজি যেমন গাজর, আলু, বা টমেটো যোগ করা যেতে পারে যা খাবারকে আরো পুষ্টিকর করে।
- প্রোটিন যুক্ত করা: বরবটির সাথে ডাল, মাংস, বা দই যোগ করা যেতে পারে যাতে একটি পূর্ণাঙ্গ ও পুষ্টিকর খাবার হয়।
রান্নার সময়:
- সঠিক তাপমাত্রা: রান্নার সময় বরবটির ভেতরের অংশ ভালোভাবে রান্না হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করুন। অতিরিক্ত রান্না করা এড়িয়ে চলুন কারণ এতে স্বাদ ও পুষ্টিগুণ কমে যেতে পারে।
- সংরক্ষণ: রান্না করা বরবটি: রান্না করা বরবটি ফ্রিজে ৩-৪ দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
- তাজা বরবটি: তাজা বরবটি একটি শীতল, শুষ্ক স্থানে সংরক্ষণ করুন এবং দ্রুত ব্যবহারের জন্য চেষ্টা করুন।
অতিরিক্ত তেল এবং লবণ এড়ানো:
- স্বাস্থ্যকর রান্না: রান্নার সময় অতিরিক্ত তেল এবং লবণ ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন। স্বাস্থ্যকর উপায়ে রান্না করলে বরবটির পুষ্টি বজায় থাকে।
বরবটি একটি বহুমুখী এবং স্বাস্থ্যকর শাকসবজি, যা বিভিন্ন রান্নায় ব্যবহার করা যেতে পারে। সঠিকভাবে রান্না এবং সংরক্ষণ করলে আপনি বরবটির সব পুষ্টিগুণ উপভোগ করতে পারবেন।
মটরশুটি ও বরবটি চাষ পদ্ধতি
মটরশুটি এবং বরবটি চাষ দুটি জনপ্রিয় শাকসবজির চাষের জন্য বিভিন্ন চাষ পদ্ধতি প্রয়োজন। এখানে তাদের চাষের জন্য মৌলিক দিকগুলো আলোচনা করা হলো:
মটরশুটি চাষ পদ্ধতি
মৌসুম এবং স্থান:
- মৌসুম: মটরশুটি সাধারণত শীতকালীন ফসল, সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাসে বপন করা হয় এবং মার্চ থেকে মে মাসে কাটা হয়।
- স্থান: মটরশুটি সুষম জলবায়ুতে ভাল হয়। বৃষ্টির পরিমাণ সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রিত হলে ভালো ফলন হয়।
মাটি প্রস্তুতি:
- মাটি: মটরশুটি স্যাঁতসেঁতে, হালকা দোআঁশ মাটিতে ভাল হয়। মাটি পুষ্টিমান সম্পন্ন হওয়া উচিত।
- মাটি প্রস্তুতি: মাটি ভালভাবে চাষ করে এবং জমি সমান করে নিতে হবে। ২-৩ বার চাষ করে মাটি ঝুরঝুরে করে নিন।
বীজ নির্বাচন ও বপন:
- বীজ নির্বাচন: ভালো গুণগত বীজ নির্বাচন করুন যা রোগ প্রতিরোধী।
- বপন: মটরশুটির বীজ ১-২ ইঞ্চি গভীরতায় এবং ২-৩ ইঞ্চি দূরত্বে লাগান। বপনের পরে মাটি হালকা করে দিন এবং জল দিন।
সেচ:
- প্রয়োজনীয় জল: মটরশুটি একটি মাঝারি পরিমাণ জল প্রয়োজন। অতিরিক্ত জল জমে গেলে মাটিতে পানি বেরিয়ে যায় এবং মটরশুটির ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
রোগ ও পোকার নিয়ন্ত্রণ:
- রোগ: সাধারণ রোগগুলি হলো পাউডারি মিলডিউ, বোট্রাইটিস ইত্যাদি। রোগ প্রতিরোধক ছত্রাকনাশক ব্যবহার করুন।
- পোকা: মটরশুটির পাতার কৃমি, মথ ইত্যাদি পোকা নিয়ন্ত্রণ করতে উপযুক্ত কীটনাশক ব্যবহার করুন।
ফসল তোলা:
- ফসল: মটরশুটির ফলন সাধারণত ৬০-৮০ দিনের মধ্যে প্রস্তুত হয়। ফসল তোলার সময় মটরশুটির সাদৃশ্য ও পরিপক্বতা পরীক্ষা করে নিন।
বরবটি চাষ পদ্ধতি
মৌসুম এবং স্থান:
- মৌসুম: বরবটি সাধারণত বর্ষা মৌসুমে চাষ করা হয়, তবে শীতকালেও চাষ করা যেতে পারে।
- স্থান: বরবটি উষ্ণ জলবায়ুতে ভাল হয়, তবে তাপমাত্রা খুব বেশি হলে এটি ভালো ফলন দিতে পারে না।
মাটি প্রস্তুতি:
- মাটি: বরবটি দোআঁশ মাটিতে ভাল ফলন দেয়। মাটি পুষ্টিমান সম্পন্ন হওয়া উচিত এবং ভাল জল নিষ্কাশন নিশ্চিত করতে হবে।
- মাটি প্রস্তুতি: জমি ভালভাবে চাষ করে মাটি সমান করে ফেলুন এবং কমপোস্ট বা সার প্রয়োগ করুন।
- বীজ নির্বাচন: ভালো মানের বীজ ব্যবহার করুন যা রোগ প্রতিরোধী।
- বপন: বরবটির বীজ সাধারণত ১-২ ইঞ্চি গভীরতায় এবং ১-২ ফুট দূরত্বে লাগান।
- প্রয়োজনীয় জল: বরবটি মাঝারি পরিমাণ জল প্রয়োজন। জল দেওয়ার সময় মাটির পানি নিস্কাশনের সুবিধা নিশ্চিত করুন।
- রোগ: বরবটির সাধারণ রোগগুলি হলো ফুসফুস, ফিউজারিয়াম ইত্যাদি। রোগ প্রতিরোধক পদার্থ ব্যবহার করুন।
- পোকা: বরবটির পাতায় বিভিন্ন পোকা আসতে পারে যেমন পাতার কৃমি, মথ ইত্যাদি। উপযুক্ত কীটনাশক ব্যবহার করুন।
- ফসল: বরবটি সাধারণত ৪৫-৬০ দিনের মধ্যে প্রস্তুত হয়। পাকা বরবটি সংগ্রহের সময় সতর্ক থাকুন এবং সবুজ ও তাজা বরবটি নির্বাচন করুন।
মটরশুটি ও বরবটি চাষের জন্য সাধারণ যত্ন এবং নিয়মগুলো অনুসরণ করলে আপনি ভাল ফলন এবং স্বাস্থ্যকর ফসল পাবেন।
মটরশুটি ও বরবটির পুষ্টিগুণ যদি আপনারা ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারেন তাহলে তা আপনাদের শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ভালো হবে। কিন্তু সব জিনিসেরই কিছু উপকারিতা এবং কিছু অপকারিতা রয়েছে। সেহেতু মটরশুটি ও বরবটির কিছু অপকারিতা রয়েছে। তবে আপনারা সাবধানে যদি এসব জিনিস গ্রহণ করেন তাহলে এতে আপনার শরীরে কোন ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে না বরঞ্চ এতে আপনাদের শরীরে বিভিন্ন রোগ বালাই থেকে রক্ষা করবে।
খাওয়ার অপকারিতা
মটরশুটি এবং বরবটি সাধারণত স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাদ্য, তবে কিছু মানুষের জন্য এগুলির খাওয়ার কিছু অপকারিতা হতে পারে। এখানে প্রতিটি খাদ্যের অপকারিতা আলোচনা করা হলো:
মটরশুটি (Green Pea) খাওয়ার অপকারিতা:
- গ্যাস এবং ফোলাভাব:
মটরশুটি ফাইবার সমৃদ্ধ এবং কিছু লোকের জন্য এটি গ্যাস এবং পেটের ফোলাভাব সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষত যদি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া হয়।
- অ্যালার্জি:
কিছু মানুষের মটরশুটির প্রতি অ্যালার্জি থাকতে পারে, যা ত্বকে র্যাশ, চুলকানি, বা শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
- অন্ত্রের সমস্যা:
মটরশুটি হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষত যদি হজম ক্ষমতা দুর্বল হয়। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য বা অন্ত্রের অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।
- ফাইটিক অ্যাসিড:
মটরশুটিতে ফাইটিক অ্যাসিড থাকে, যা কিছু পরিমাণে মিনারেল শোষণে বাধা দিতে পারে, যদিও সাধারণভাবে এটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য হওয়ায় সমস্যা সৃষ্টি করে না।
বরবটি (Ridge Gourd) খাওয়ার অপকারিতা:
- হজমের সমস্যা:
বরবটি কিছু মানুষের জন্য হজমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষ করে যদি এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া হয়।
- অ্যালার্জি:
কিছু মানুষের বরবটির প্রতি অ্যালার্জি থাকতে পারে, যা ত্বকে অস্বস্তি বা শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
- রোগীর শারীরিক অবস্থার প্রভাব:
যে ব্যক্তির কিডনি বা লিভারের সমস্যার ইতিহাস থাকে, তাদের জন্য বরবটির কিছু উপাদান সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তবে এটি সাধারণত অস্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে বিবেচিত নয়।
- ফাইবার সমৃদ্ধ:
বরবটি উচ্চ ফাইবারে ভরপুর, যা অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ার ফলে গ্যাস এবং কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। ধীরে ধীরে পরিমাণ বাড়ানো ভালো।
মোটের উপর, মটরশুটি এবং বরবটি একটি সুস্থ খাদ্য তালিকার অংশ হিসেবে খুব উপকারী। তবে, কিছু লোকের জন্য যদি এই খাদ্যগুলি সমস্যা সৃষ্টি করে, তাহলে তা খাওয়ার পরিমাণ বা প্রস্তুত প্রণালী পরিবর্তন করে দেখতে পারেন এবং প্রয়োজনে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
লেখক এর মন্তব্যঃ
অন্যান্য খাবারের চেয়ে ফলমুলে বেশি পরিমাণে পুষ্টিমান বিদ্যমান থাকে। কোন ফলে কি রকম পুষ্টিমান থাকে খাওয়ার আগে তা জেনে নেওয়া জরুরী। এবং কোন শরীরের জন্য ক্ষতিকর তাও জেনে রাখা প্রয়োজন। কিছু কিছু ফল রয়েছে যা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এইসব ফল সম্পর্কে জানার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন।
আরো পড়ুনঃ পৃথিবীর সবচেয়ে মারাত্মক কিছু ফল।
তাই স্বাস্থ্যবান জীবনযাপনের জন্য বাদামকে আপনার খাবার তালিকায় স্থায়ীভাবে অন্তর্ভুক্ত করা বুদ্ধিমানের কাজ। আপনাকে যদি আমি উপযুক্ত তথ্য দিতে পারি তাহলে আপনি আপনার সকল বন্ধুদের সাথে এ বিষয়টি শেয়ার করবেন এবং ভালো লাগলে আমার ব্লগটি নিয়মিত ভিজিট করবেন।আপনাদের যদি আমার লিখা পড়ে ভালো লাগে তাহলে ইচ্ছা হলে আমার ব্লগটি নিয়মিত পরিদর্শন করবেন। সকলে ভালো থাকবেন ফি আমানিল্লাহ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url