ভুট্টা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং চাষ পদ্ধতি

ভুট্টা, যা ইংরেজিতে "Corn" নামে পরিচিত, একটি প্রাচীন এবং গুরুত্বপূর্ণ শস্য যা বিশ্বজুড়ে ব্যাপকভাবে চাষ করা হয়। এটি মূলত মধ্য আমেরিকা থেকে উদ্ভূত হলেও বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এর চাষ করা হয়। ভুট্টার বৈশিষ্ট্যগত দিক থেকে এটি উচ্চ কার্বোহাইড্রেট এবং শর্করা সমৃদ্ধ, যা এটির শক্তির মূল উৎস হিসেবে কাজ করে।
ভুট্টা-খাওয়ার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা-এবং-চাষ-পদ্ধতি
ভুট্টার পুষ্টিগুণ উল্লেখযোগ্য। এতে ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, এবং ম্যাগনেসিয়াম সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান থাকে। এটি হজম সহায়ক এবং হার্ট ও চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

ভুট্টার পুষ্টি উপাদান

ভুট্টা একটি পুষ্টিকর খাদ্যদ্রব্য যা বিভিন্ন ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার সমৃদ্ধ। এর কিছু প্রধান পুষ্টি উপাদান হলো:
  1. কার্বোহাইড্রেট: ভুট্টা মূলত কার্বোহাইড্রেটের একটি ভাল উৎস, যা শক্তির একটি প্রধান উৎস হিসেবে কাজ করে।
  2. প্রোটিন: এটি প্রোটিনের একটি ভাল উৎস, যদিও তুলনামূলকভাবে কম পরিমাণে।
  3. ফাইবার: ভুট্টাতে ভালো পরিমাণে ফাইবার থাকে যা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমায়।
  4. ভিটামিন বি কমপ্লেক্স: বিশেষ করে ভিটামিন বি১ (থিয়ামিন), ভিটামিন বি৫ (প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড), এবং ভিটামিন বি৯ (ফলেট) উপস্থিত থাকে।
  5. ভিটামিন সি: এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং ইমিউন সিস্টেমের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে।
  6. ভিটামিন এ: ভুট্টায় লুটিন এবং জিয়াজান্থিনের মতো কারোটেনয়েড থাকে যা ভিটামিন এ-এর রূপে পরিণত হয় এবং চোখের স্বাস্থ্য রক্ষা করতে সহায়ক।
  7. পটাসিয়াম: পটাসিয়াম আমাদের হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্যের জন্য এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  8. ম্যাগনেসিয়াম: এটি হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা করতে এবং স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা বজায় রাখতে সহায়ক।
ভুট্টা প্রাকৃতিকভাবে চিনি এবং চর্বিতে কম থাকে, তবে এটি অধিকাংশ মানুষকে সুস্থ এবং পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে প্রস্তাবিত।

ভুট্টা খাওয়ার উপকারিতা

ভুট্টা খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। কিছু মূল উপকারিতা হলো:
  • শক্তির উৎস: ভুট্টা উচ্চ পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট ধারণ করে, যা আমাদের শরীরকে দ্রুত শক্তি প্রদান করে।
  • হজম স্বাস্থ্যের উন্নতি: ভুট্টায় প্রচুর ফাইবার থাকে যা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।
  • হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্য: ভুট্টায় পটাসিয়াম থাকে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
  • চোখের স্বাস্থ্য: ভুট্টায় লুটিন এবং জিয়াজান্থিন থাকে, যা চোখের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং চোখের বিভিন্ন রোগ যেমন ম্যাকুলার ডিজেনারেশন প্রতিরোধে সাহায্য করে।
  • ইমিউন সিস্টেমের সমর্থন: ভুট্টায় ভিটামিন সি থাকে যা আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে সহায়ক এবং সর্দি-কাশির ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
  • হাড়ের স্বাস্থ্য: ভুট্টায় ম্যাগনেসিয়াম ও অন্যান্য খনিজ উপাদান থাকে যা হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে এবং অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
  • পুষ্টি সমৃদ্ধ: ভুট্টা একটি ভাল উৎস প্রোটিন, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানের, যা আমাদের শরীরের সার্বিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণ: ভুট্টা স্যাচুরেটেড ফ্যাটে কম এবং স্বাস্থ্যকর ফাইবারে সমৃদ্ধ, যা দীর্ঘ সময় ধরে পূর্ণতা অনুভব করতে সাহায্য করে এবং অতিরিক্ত খাওয়া কমায়।
ভুট্টা যদি সঠিকভাবে রান্না করা হয় এবং সুস্থ খাদ্যাভ্যাসের অংশ হিসেবে খাওয়া হয়, তবে এটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য একটি ভালো সংযোজন হতে পারে।

ভুট্টা খাওয়ার অপকারিতা

ভুট্টা সাধারণত একটি পুষ্টিকর খাদ্য, কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে এর অতিরিক্ত বা ভুলভাবে ব্যবহারের ফলে কিছু অপকারিতা হতে পারে। এখানে কিছু সম্ভাব্য অপকারিতা উল্লেখ করা হলো:
  • অতিরিক্ত ক্যালোরি এবং কার্বোহাইড্রেট: ভুট্টা একটি উচ্চ কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার, তাই এর অতিরিক্ত খাওয়া ওজন বৃদ্ধি বা রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। ডায়াবেটিস বা মেটাবলিক সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য এটি একটি বিবেচ্য বিষয় হতে পারে।
  • অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত ভুট্টার পণ্য: ভুট্টার বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত পণ্য যেমন ভুট্টার তেল, ভুট্টার সিরাপ ইত্যাদি বেশি পরিমাণে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এই প্রক্রিয়াজাত পণ্যগুলো অধিক চিনি, ট্রান্স ফ্যাট এবং ক্যালোরি সমৃদ্ধ হতে পারে।
  • অ্যালার্জি সমস্যা: কিছু মানুষের ভুট্টার প্রতি অ্যালার্জি হতে পারে, যা চর্মরোগ, হজম সমস্যা বা শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
  • অপ্রাকৃতিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়া ভুট্টা: যদি ভুট্টা জেনেটিকালি মোডিফায়েড (GM) হয় বা অধিক পরিমাণে কীটনাশক ব্যবহৃত হয়, তবে এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
  • অতিরিক্ত ফাইবার: অতিরিক্ত পরিমাণে ভুট্টা খেলে, বিশেষ করে যদি আপনার পুষ্টির অভ্যাসে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার না থাকে, তাহলে এটি গ্যাস, পেট ফাঁপা, বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
  • রক্তের গ্লুকোজে প্রভাব: ভুট্টা উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত হতে পারে, যা রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দিতে পারে। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
ভুট্টা স্বাস্থ্যকর খাদ্য হতে পারে যদি এটি মেপে-মেপে এবং সুষম খাদ্যাভ্যাসের অংশ হিসেবে খাওয়া হয়। খাদ্যতালিকায় কোনো কিছু যুক্ত করার আগে আপনার ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য পরিস্থিতি এবং খাদ্য সংক্রান্ত প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ।
সার্বিকভাবে, ভুট্টা একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং বহুল ব্যবহৃত শস্য যা মানব খাদ্য এবং কৃষিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। সঠিকভাবে চাষ এবং ব্যবহারের মাধ্যমে এর পুষ্টিগুণ এবং উপকারিতা সর্বাধিক উপভোগ করা সম্ভব।

ভুট্টার সাইলেজ তৈরির পদ্ধতি

ভুট্টার সাইলেজ একটি গুরুত্বপূর্ণ পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়, বিশেষ করে দুধ ও মাংসের গরু পালনকারী খামারগুলোতে। সঠিকভাবে তৈরি করা সাইলেজ পশুর পুষ্টির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভুট্টার সাইলেজ তৈরির সাধারণ পদ্ধতি হলো:
  1. ভুট্টার নির্বাচন ও প্রস্তুতি
    • ভুট্টার ধরন: সাধারণত সাইলেজের জন্য বিশেষ ধরনের ভুট্টা ব্যবহার করা হয় যা উচ্চ জলবস্তু এবং শর্করা ধারণ করে।
    • সংগ্রহের সময়: ভুট্টা সংগ্রহের সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আদর্শভাবে, ভুট্টা সেই সময়ে সংগ্রহ করতে হয় যখন দানার জলবস্তু 60-70% এবং ভুট্টার দানা পূর্ণতর হয়ে যায়।
  2. ভুট্টা কাটা
    • কাটার পদ্ধতি: ভুট্টা কাটার জন্য সাধারণত সাইলেজার ব্যবহার করা হয়। এটি ভুট্টার কান ও পাতাগুলোকে ছোট ছোট টুকরো করে যা সাইলেজ তৈরির জন্য সহায়ক।
    • আকার: ভুট্টার কাটা টুকরোগুলোর আকার সাধারণত 1-2 ইঞ্চি হওয়া উচিত যাতে সাইলেজ প্রক্রিয়া ভালোভাবে ঘটে।
  3. সাইলেজ বানানো
    • বিষয়ে ভিটামিন কিটিং: সাইলেজ বানানোর জন্য সাধারণত সাইলেজ বক্স, সাইলেজ পিট বা সাইলেজ সিলোস ব্যবহৃত হয়।
    • মিশ্রণ: কাটার পর ভুট্টার টুকরোগুলোকে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। প্রয়োজনে গমের লাশ বা অন্যান্য উপাদান যোগ করতে পারেন।
  4. প্যাকিং ও সিলিং
    • প্যাকিং: সাইলেজ তৈরি করার পরে এটি ভালভাবে প্যাক করতে হবে। বায়ু নিরোধক সীল ব্যবহার করুন যাতে বাতাস প্রবেশ করতে না পারে।
    • চাপ দেওয়া: সাইলেজকে চাপ দিয়ে এবং সিল করে রাখুন। এতে করে অক্সিজেন প্রবেশ করবে না এবং ফার্মেন্টেশন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন হবে।
  5. ফার্মেন্টেশন
    • সময়কাল: সাইলেজের ফার্মেন্টেশন প্রক্রিয়া সাধারণত 3-6 সপ্তাহ সময় নিতে পারে। এই সময়ে, ভুট্টার শর্করা এবং পুষ্টি উপাদানগুলোতে পরিবর্তন ঘটে।
    • মৌসুম: শীতকালে সাইলেজ তৈরি করলে এটি ভালোভাবে সংরক্ষিত থাকে কারণ ঠান্ডা আবহাওয়া ফার্মেন্টেশন প্রক্রিয়াকে ধীর করে।
  6. সাইলেজের গুণগত মান পরীক্ষা
    1. গুণগত মান: সাইলেজ তৈরি হওয়ার পর এটি ব্যবহার করার আগে তার গুণগত মান পরীক্ষা করা উচিত। দেখতে হবে যে সাইলেজ পচে না গেছে এবং এতে কোনও অস্বাভাবিক গন্ধ নেই।
  7. সঞ্চয় ও ব্যবহার
    • সঞ্চয়: সাইলেজ একটি নিরাপদ স্থানে সঞ্চয় করুন যাতে এটি সংরক্ষিত থাকে।
    • ব্যবহার: পশুর খাদ্য হিসেবে সাইলেজ ব্যবহার করার আগে এটি ভালোভাবে মিশিয়ে নিন এবং নিশ্চিত করুন যে এটি ভালভাবে সংরক্ষিত হয়েছে।
এই পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করলে সঠিকভাবে ভুট্টার সাইলেজ তৈরি করতে পারবেন যা আপনার পশুর পুষ্টির জন্য উপকারি হবে।

ভুট্টা চাষ পদ্ধতি

ভুট্টা চাষ একটি গুরুত্বপূর্ণ কৃষি প্রক্রিয়া যা সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে ভালো ফলন দিতে পারে। এখানে ভুট্টা চাষের একটি সাধারণ পদ্ধতি উল্লেখ করা হলো:
ভুট্টার-জন্য-ভাল-সেচযোগ্য-এবং-উর্বর-মাটিনির্বাচন-করুন
  1. মাটির প্রস্তুতি
    • মাটি নির্বাচন: ভুট্টার জন্য ভাল সেচযোগ্য এবং উর্বর মাটি নির্বাচন করুন। লাল মাটি বা সাদামাটি সাধারণত ভালো হয়। মাটির pH ৬-৭ হওয়া উচিত।
    • মাটির পরিস্কার: প্রথমে মাটি পরিষ্কার করুন এবং আগাছা বা অন্যান্য অবশিষ্ট পদার্থ সরান।
    • জরাই ও চাষ: মাটি গভীরভাবে জরাই করুন এবং চাষ করুন যাতে মাটি হালকা ও দোঁআশ থাকে।
  2. বীজ বপন
    • বীজের নির্বাচন: উচ্চ ফলনশীল এবং রোগ প্রতিরোধী ভুট্টার বীজ নির্বাচন করুন।
    • বপনের সময়: ভুট্টা সাধারণত গরম মৌসুমে চাষ করা হয়। বপনের জন্য আদর্শ সময় হলো বসন্তের শেষভাগ বা গ্রীষ্মের শুরু।
    • বপনের পদ্ধতি: বীজ বপনের জন্য সাধারণত সারিতে বপন করা হয়। সারির মধ্যে ২০-৩০ সেন্টিমিটার দূরত্ব রাখুন এবং প্রতি সারে ১০-১৫ সেন্টিমিটার দূরত্বে বীজ বপন করুন।
  3. সেচ
    • সেচের পরিকল্পনা: ভুট্টা সেচের জন্য প্রয়োজনীয় জল সরবরাহ নিশ্চিত করুন। গরম ও শুকনো মৌসুমে বেশি সেচ প্রয়োজন হতে পারে।
    • জলবদ্ধতা: মাটির জলবদ্ধতা থেকে বিরত থাকুন কারণ এটি ভুট্টার মূলের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
  4. সার ও পুষ্টি
    • জৈব সার: মাটির উর্বরতা বাড়ানোর জন্য জৈব সার (যেমন গোবর সার) ব্যবহার করুন।
    • রাসায়নিক সার: পুষ্টির অভাব পূরণের জন্য নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশিয়াম সার ব্যবহার করুন। সার দেওয়ার সময় মাটির পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় সার প্রয়োগ করুন।
  5. আগাছা ও কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ
    • আগাছা নিয়ন্ত্রণ: আগাছা নিয়ন্ত্রণের জন্য মাটি নিয়মিত পরিষ্কার করুন এবং প্রয়োজনে আগাছানাশক ওষুধ ব্যবহার করুন।
    • কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ: ভুট্টার পাতা, কান বা অন্যান্য অংশে কীটপতঙ্গ দেখা দিলে উপযুক্ত কীটনাশক ব্যবহার করুন।
  6. মুলচিং
    • মুলচিং: মাটির আদ্রতা ধরে রাখতে এবং আগাছা প্রতিরোধ করতে মুলচিং ব্যবহার করতে পারেন।
  7. কাটা ও সংরক্ষণ
    • ফলনের সময়: ভুট্টা পেকে গেলে সাধারণত কানগুলো সোনালী রঙের হয় এবং দানার জলবস্তু ১৫-২৫% হয়।
    • কাটা: পাকা ভুট্টা কেটে নিন। অতিরিক্ত জল কমানোর জন্য মিষ্টি ভুট্টা কাটা হলে, এটি কিছুদিন শুকিয়ে নেওয়া ভাল।
    • সংরক্ষণ: কাটা ভুট্টা সঠিকভাবে সংরক্ষণ করুন যাতে এটি পোকামাকড় বা অন্যান্য ক্ষতিকারক বিষয় থেকে মুক্ত থাকে।
  8. পরবর্তী চাষ
    • মাটির বিশ্রাম: ভুট্টা চাষের পর মাটি বিশ্রাম দিন অথবা রোটেশন চাষ করুন যাতে মাটির উর্বরতা বজায় থাকে।
এই পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করলে আপনি সফলভাবে ভুট্টা চাষ করতে পারবেন এবং ভালো ফলন পেতে পারেন।
তবে, ভুট্টার চাষে কিছু সমস্যা থাকতে পারে, যেমন কীটপতঙ্গ এবং রোগ এর আক্রমণ। এছাড়া, প্রক্রিয়াজাত ভুট্টার পণ্যগুলো চিনি ও ট্রান্স ফ্যাট সমৃদ্ধ হতে পারে, যা অতিরিক্ত খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

ভুট্টা চাষের উপযুক্ত সময়

ভুট্টা চাষের জন্য গরম এবং সেচযোগ্য মাটি উপযুক্ত। এর চাষ সাধারণত বসন্তের শেষভাগ থেকে গ্রীষ্মের শুরু পর্যন্ত করা হয়, যখন মাটির তাপমাত্রা ১০-১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে। ভুট্টার বীজ বপন করার পর, এটি ৭০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে পেকে ওঠে, এর প্রকারভেদ অনুসারে।
ভুট্টা-চাষের-উপযুক্ত-সময়
ভুট্টা চাষের জন্য উপযুক্ত সময় নির্ভর করে আপনার এলাকার জলবায়ু এবং মাটির অবস্থা অনুযায়ী। সাধারণভাবে, ভুট্টা চাষের জন্য কিছু মূল দিকনির্দেশনা এখানে তুলে ধরা হলো:
  1. মৌসুম এবং জলবায়ু
    • গরম মৌসুম: ভুট্টা চাষ সাধারণত গরম মৌসুমে করা হয়, যেখানে তাপমাত্রা ১৫-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে। ভুট্টা ঠান্ডা আবহাওয়ার প্রতি সহনশীল নয় এবং ঠান্ডা তাপমাত্রায় ভালোভাবে বৃদ্ধি পায় না।
    • মৌসুমের সময়: সাধারণত বসন্তের শেষে থেকে গ্রীষ্মের শুরু পর্যন্ত ভুট্টা চাষ করা হয়। বিশেষ করে, মাটির তাপমাত্রা ১০-১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে হবে বীজ বপনের জন্য।
  2. মাটি প্রস্তুতি
    • মাটির তাপমাত্রা: ভুট্টা বপনের জন্য মাটির তাপমাত্রা প্রায় ১০-১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হওয়া উচিত। অনেক সময় এই তাপমাত্রা নিশ্চিত করতে বসন্তের শেষভাগে বীজ বপন করা হয়।
  3. বীজ বপনের সময়
    • বপনের সময়সূচি: সাধারণত বসন্তের শেষভাগ থেকে গ্রীষ্মের শুরু পর্যন্ত বীজ বপন করা হয়। নির্দিষ্টভাবে, মার্চ থেকে মে পর্যন্ত সময় বপনের জন্য উপযুক্ত। তবে, এটি আপনার এলাকার আবহাওয়া এবং জলবায়ুর উপর নির্ভরশীল।
  4. জলবায়ু ও মাটির অবস্থা
    • বর্ষা ও সেচ: যদি বর্ষার সময় ভুট্টা চাষ করা হয়, তাহলে মাটির জলবদ্ধতা সমস্যা হতে পারে। সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে জল সরবরাহ নিশ্চিত করুন, কিন্তু অতিরিক্ত জল যেন না থাকে।
  5. স্থানীয় ওয়েদার কন্ডিশন
    • আঞ্চলিক পার্থক্য: আপনার এলাকার জলবায়ু ও আবহাওয়া অনুযায়ী বপনের সময় সামান্য পরিবর্তিত হতে পারে। স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী আপনার এলাকার জন্য উপযুক্ত সময় নির্ধারণ করা উচিত।
  6. কাটা সময়
    • ফলন সংগ্রহের সময়: ভুট্টা সাধারণত ৭০-১০০ দিন পরে কাটা হয়, depending on the variety. যখন ভুট্টার দানার জলবস্তু ১৫-২৫% হয় এবং দানাগুলো শক্ত ও সোনালী রঙের হয়, তখন কাটা উচিত।
সঠিক সময়ে বীজ বপন এবং যথাযথ মাটি প্রস্তুতি ভুট্টা চাষের সফলতা নিশ্চিত করতে সহায়ক। আপনার এলাকার আবহাওয়া এবং জলবায়ুর ওপর ভিত্তি করে স্থানীয় কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ করা সর্বদা ভাল।

লেখক এর মন্তব্যঃ

অন্যান্য খাবারের চেয়ে ফলমুলে বেশি পরিমাণে পুষ্টিমান বিদ্যমান থাকে। কোন ফলে কি রকম পুষ্টিমান থাকে খাওয়ার আগে তা জেনে নেওয়া জরুরী। এবং কোন শরীরের জন্য ক্ষতিকর তাও জেনে রাখা প্রয়োজন। কিছু কিছু ফল রয়েছে যা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এইসব ফল সম্পর্কে জানার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন।
তাই স্বাস্থ্যবান জীবনযাপনের জন্য ভুট্টাকে আপনার খাবার তালিকায় স্থায়ীভাবে অন্তর্ভুক্ত করা বুদ্ধিমানের কাজ। আপনাকে যদি আমি উপযুক্ত তথ্য দিতে পারি তাহলে আপনি আপনার সকল বন্ধুদের সাথে এ বিষয়টি শেয়ার করবেন এবং ভালো লাগলে আমার ব্লগটি নিয়মিত ভিজিট করবেন।আপনাদের যদি আমার লিখা পড়ে ভালো লাগে তাহলে ইচ্ছা হলে আমার ব্লগটি নিয়মিত পরিদর্শন করবেন। সকলে ভালো থাকবেন ফি আমানিল্লাহ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url