ডালিমের ১০ টি উপকারিতা, অপকারিতা এবং চাষ পদ্ধতি

আপনারা ডালিমের ১০ টি উপকারিতা এবং ডালিমের সম্পর্কে অন্যান্য বিভিন্ন তথ্য জানতে চেয়েছেন। আজকের এই আর্টিকেলে আমি ডালিম সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরব। আশা করব আপনারা যা চাইবেন উপযুক্ত তথ্য আমি আপনাদের দিতে পারব। ডালিম, যাকে ইংরেজিতে "পমেগ্রানেট" বলা হয়, এটি একটি পরিচিত এবং পুষ্টিকর ফল।কাঁচা এবং পাকা- দুই ধরনের টমেটোই পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। তবে পাকা টমেটোর তুলনায় কাঁচা টমোটো বেশি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন বলে মতামত বিজ্ঞানীদের।


অনেকেই ডালিমে খেতে অনেক পছন্দ করে। এটি বিশেষত তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতার উপর নির্ভরশীল, এবং ভারত, ইরান, তুরস্ক, আফগানিস্তান, এবং অন্যান্য উষ্ণ অঞ্চলে বেশি পাওয়া যায়। ডালিমের গায়ে লাল-কমলা রঙের শক্ত শেলের মধ্যে থাকে সুস্বাদু ও পুষ্টিকর রসালো দানা।

ডালিম খাওয়ার উপকারিতা

ডালিমের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস হৃদযন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখতে সহায়ক। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায়। এছাড়া, ডালিম হজম প্রক্রিয়া সহজতর করতে এবং ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে সহায়ক। ডালিম, বা পোমেগ্রানেট, একটি পুষ্টিকর ফল যা নানা উপকারিতার জন্য পরিচিত। এর কিছু প্রধান উপকারিতা হলো:
  1. অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর: ডালিমে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস শরীরকে ফ্রি র্যাডিক্যালসের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করতে সহায়ক।
  2. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: ডালিমের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস এবং পলিফেনলস হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এটি রক্তচাপ কমাতে এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
  3. প্রতিকারক ক্ষমতা: ডালিমের মধ্যে থাকা পটাশিয়াম এবং ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।
  4. হজমের জন্য উপকারী: ডালিমে থাকা ফাইবার হজমের সহায়তা করে এবং পেটের সমস্যাগুলি যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সহায়ক।
  5. ত্বক ভাল রাখে: ডালিমের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস ত্বকের সারকুলেশন উন্নত করে, যা ত্বককে উজ্জ্বল এবং সতেজ রাখে।
  6. শরীরের প্রদাহ কমায়: ডালিমের অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণাবলী শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
  7. মেমরি উন্নত করে: কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, ডালিম মেমরি এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়ক।
  8. ওজন কমাতে সাহায্য করে: ডালিমের ফাইবার ক্যালোরি কম রেখে দীর্ঘ সময়ের জন্য পূর্ণতার অনুভূতি প্রদান করতে সহায়ক।
  9. মাথাব্যাথা কমায়: ডালিমের মধ্যে থাকা ম্যাঙ্গানিজ মাথাব্যাথার উপসর্গ কমাতে সহায়ক হতে পারে।
  10. হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করে: ডালিমের পুষ্টি হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করতে সহায়ক, যা বিশেষ করে মহিলাদের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়ক।
এই সুবিধাগুলি পেতে, একটি দৈনিক খাদ্যতালিকায় ডালিম অন্তর্ভুক্ত করা একটি ভালো অভ্যাস হতে পারে।

পুষ্টি উপাদান

ডালিম বিভিন্ন ভিটামিন, মিনারেলস, এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। এর মধ্যে ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, পটাশিয়াম, এবং ফাইবার উল্লেখযোগ্য। বিশেষ করে, ডালিমের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস শরীরকে ফ্রি র্যাডিক্যালসের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে, যা সেলুলার ক্ষতি এবং বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
ডালিমের পুষ্টিগুণ যদি আপনারা ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারেন তাহলে তা আপনাদের শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ভালো হবে। কিন্তু সব জিনিসেরই কিছু উপকারিতা এবং কিছু অপকারিতা রয়েছে। সেহেতু ডালিমের কিছু অপকারিতা রয়েছে। তবে আপনারা সাবধানে যদি এসব জিনিস গ্রহণ করেন তাহলে এতে আপনার শরীরে কোন ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে না বরঞ্চ এতে আপনাদের শরীরে বিভিন্ন রোগ বালাই থেকে রক্ষা করবে।

ডালিম খাওয়ার অপকারিতা

ডালিম সাধারণত স্বাস্থ্যকর ফল হিসেবে পরিচিত হলেও, কিছু মানুষের জন্য এর কিছু সম্ভাব্য অপকারিতা থাকতে পারে। এগুলি সাধারণত অতিরিক্ত পরিমাণে ডালিম খাওয়ার ফলস্বরূপ হতে পারে। এখানে কিছু সম্ভাব্য অপকারিতা উল্লেখ করা হলো:
  1. অতিরিক্ত চিনির পরিমাণ: ডালিমের মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে অনেক চিনির উপস্থিতি থাকে। অতিরিক্ত পরিমাণে ডালিম খেলে রক্তে চিনির পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
  2. হজমের সমস্যা: বেশি পরিমাণে ডালিম খেলে পেটের সমস্যা, যেমন গ্যাস, পেটের ব্যথা বা কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। এটি মূলত ফাইবারের উচ্চ পরিমাণের কারণে।
  3. এলার্জি বা প্রতিক্রিয়া: কিছু মানুষ ডালিমে এলার্জি অনুভব করতে পারেন। এলার্জির লক্ষণ যেমন চুলকানি, ফুসকুড়ি, বা পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  4. অ্যান্টি-হাইপারটেনসিভ ওষুধের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া: ডালিম রক্তচাপ কমাতে সহায়ক, কিন্তু যদি আপনি উচ্চ রক্তচাপের জন্য ওষুধ খান, তাহলে ডালিম খাওয়ার ফলে রক্তচাপ অনেকটাই কমে যেতে পারে যা স্বাস্থ্যগত সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
  5. দাঁত ও মুখের সমস্যা: ডালিমের অ্যাসিডিক প্রকৃতি দাঁতের এনামেল ক্ষতি করতে পারে এবং মুখে অস্বস্তি বা জ্বালাপোড়ার অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে।
  6. অতিরিক্ত ক্যালোরি: যদিও ডালিমে ক্যালোরির পরিমাণ খুব বেশি নয়, তবুও অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে শরীরের অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ হতে পারে, যা ওজন বাড়াতে পারে।
  7. প্রস্রাবের সমস্যা: ডালিমের মধ্যে কিছু উপাদান এমন হতে পারে যা প্রায়শই প্রস্রাবের পরিমাণ বৃদ্ধি করে, যা কিছু মানুষের জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে।
এই কারণে, ডালিম খাওয়ার সময় পরিমাণে সচেতন থাকা উচিত এবং যদি কোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যা থাকে, তবে বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

ডালিম ও বেদানার পার্থক্য

ডালিম (পোমেগ্রানেট) এবং বেদানা দুটি ভিন্ন ফল হলেও মাঝে মাঝে তাদের মধ্যে বিভ্রান্তি হতে পারে। তবে, তাদের মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে:

১. ফল ও তন্তুর ধরন

  • ডালিম: ডালিমের বাইরের খোসা পুরু ও শক্ত, এবং ভিতরে ছোট ছোট লাল রসযুক্ত তন্তু বা সিড থাকে যা খাওয়া হয়। এগুলি মূলত গোলাকার এবং সারা ফল জুড়ে ছড়িয়ে থাকে।

  • বেদানা: বেদানা সাধারণত গোলাকার ফল যা একাধিক সাদা তন্তুর মধ্যে থাকে। এটি পাকা হলে সাদা, হালকা হলুদ বা কমলা রঙের হয় এবং প্রায়শই একটি ছোট পাতার অংশ থাকে।

২. স্বাদ ও স্বাদযুক্ত উপাদান

  • ডালিম: ডালিমের স্বাদ মিষ্টি ও টক। এর তন্তুগুলির মধ্যে প্রচুর রস থাকে যা পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু।

  • বেদানা: বেদানার স্বাদ তুলনামূলকভাবে মিষ্টি এবং হালকা। এটি তুলনামূলকভাবে কম টক এবং কিছুটা মিষ্টি স্বাদযুক্ত।

৩. পুষ্টি উপাদান

  • ডালিম: ডালিম ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ফাইবার, এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। এটি হজম, হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্য এবং প্রদাহ কমাতে সহায়ক।

  • বেদানা: বেদানা ভিটামিন সি, ফাইবার, এবং কিছু প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ ধারণ করে। এটি সাধারণত কম ক্যালোরি এবং সুগার কম থাকে।

৪. স্বাস্থ্য উপকারিতা

  • ডালিম: হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে, প্রদাহ কমাতে, এবং ত্বক ও হজম স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করে।

  • বেদানা: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক, হজম স্বাস্থ্যের জন্য ভালো এবং মৌসুমি ভিটামিন সি সরবরাহ করে।

৫. বিপণন ও ব্যবহার

  • ডালিম: ডালিমের রস এবং সিড স্যালাড, ডেজার্ট, এবং বিভিন্ন রান্নায় ব্যবহৃত হয়।

  • বেদানা: বেদানা সাধারণত স্ন্যাক হিসেবে খাওয়া হয় এবং বিভিন্ন রান্নায় বা সালাদে ব্যবহৃত হয়।

৬. উৎপত্তি ও চাষ

  • ডালিম: ডালিম মূলত ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে উৎপন্ন হয় এবং উষ্ণ জলবায়ুতে ভালো বৃদ্ধি পায়।

  • বেদানা: বেদানা সাধারণত উষ্ণ এবং মৃদু জলবায়ুতে চাষ করা হয় এবং এটি দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্য প্রাচ্যে জনপ্রিয়।

এই পার্থক্যগুলো সত্ত্বেও, উভয় ফলই স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর, এবং আপনার পছন্দ ও প্রয়োজনের উপর নির্ভর করে তাদের ব্যবহার করতে পারেন।


ডালিম খেলে কি রক্ত বাড়ে এবং ডালিম খাওয়ার নিয়ম

ডালিম কাঁচা খাওয়া ছাড়াও বিভিন্ন রূপে ব্যবহৃত হয়। এটি জুস হিসেবে পান করা যেতে পারে, সালাদে যোগ করা যেতে পারে, অথবা পেস্ট্রি এবং মিষ্টান্নের মধ্যে ব্যবহৃত হয়। কিছু সংস্কৃতিতে ডালিমকে ঐতিহ্যগতভাবে শুভ চিহ্ন হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং বিবাহ বা অন্যান্য উৎসবে এটি ব্যবহৃত হয়।
ডালিম (পোমেগ্রানেট) একটি পুষ্টিকর ফল যা রক্তস্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়ক হতে পারে, তবে এটি সরাসরি রক্ত বাড়ানোর সাথে সম্পর্কিত নয়। ডালিমের কিছু উপকারী দিক রয়েছে যা রক্তের স্বাস্থ্য ও সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য সহায়ক:

ডালিম খেলে রক্তস্বাস্থ্য উন্নতির সম্ভাব্য উপকারিতা:

আয়রনের উৎস: ডালিম আয়রন-সমৃদ্ধ, যা রক্তের হিমোগ্লোবিনের স্তর বাড়াতে সহায়ক হতে পারে। হিমোগ্লোবিন রক্তের অক্সিজেন পরিবহন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
ভিটামিন সি: ডালিমে উচ্চ পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে, যা আয়রনের শোষণ উন্নত করতে সহায়ক এবং রক্তের হিমোগ্লোবিনের স্তর বাড়াতে সহায়তা করে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস: ডালিমে পাওয়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস রক্তনালী সুস্থ রাখতে সহায়ক এবং রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে।

ডালিম খাওয়ার নিয়ম:

  • পরিমাণে সতর্কতা: দৈনিক ১টি মাঝারি আকারের ডালিম বা এর সমতুল্য পরিমাণে ডালিমের রস খাওয়া সাধারণত নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর। অতিরিক্ত খাওয়ার ক্ষেত্রে ক্যালোরি বা চিনির অতিরিক্ত গ্রহণের সম্ভাবনা থাকে।
  • ফ্রেশ খাওয়া: ডালিমের সিডগুলো সরাসরি খাওয়া যায়। আপনি সালাদ, দই, বা অন্যান্য খাবারের সাথে এটি যোগ করতে পারেন।
  • রস হিসেবে ব্যবহার: ডালিমের রস তৈরি করে খাওয়া যায়, তবে চিনি বা অতিরিক্ত মিষ্টি যোগ না করার চেষ্টা করুন। প্রাকৃতিকভাবে প্রস্তুত রস সবচেয়ে ভালো।
  • শুদ্ধতা: ডালিম কিনতে গেলে তা ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন এবং তাজা থাকাটা নিশ্চিত করুন। পুরানো বা নষ্ট ফল এড়িয়ে চলুন।
  • নিয়মিত ব্যবহার: ডালিম খাওয়ার ক্ষেত্রে নিয়মিত, কিন্তু পরিমাণে সতর্ক থাকা উচিত। অতিরিক্ত খাওয়ার পরিবর্তে একটি সুষম ডায়েটের অংশ হিসেবে ডালিম অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
  • স্বাস্থ্য সমস্যা: যদি আপনার রক্তচাপের সমস্যা থাকে বা কোনো বিশেষ স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে, তাহলে ডালিমের পরিমাণ সম্পর্কে পরামর্শের জন্য একজন পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
ডালিম আপনার খাদ্যতালিকায় যুক্ত করলে তা স্বাস্থ্যকরভাবে ফায়দা দিতে পারে, তবে সব সময় পরিমাণ ও পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া উচিত।

ডালিম চাষ পদ্ধতি

ডালিমের চাষ উষ্ণ এবং মৃদু জলবায়ুতে ভালো হয়। মাটি ভালোভাবে প্রস্তুত করা, সঠিক সেচ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, এবং নিয়মিত সার প্রয়োগ ডালিমের চাষে সফলতা অর্জনে সাহায্য করে। সঠিক পরিচর্যা ও যত্নের মাধ্যমে উচ্চমানের ফলন পাওয়া যায়। ডালিম (পোমেগ্রানেট) চাষ একটি লাভজনক কৃষি কার্যক্রম হতে পারে, বিশেষ করে যদি আপনি সঠিক চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করেন। এখানে ডালিম চাষের জন্য প্রাথমিক পদক্ষেপগুলো উল্লেখ করা হলো:

১. জমির প্রস্তুতি

  • জমির নির্বাচন: ডালিম চাষের জন্য উষ্ণ ও মৃদু জলবায়ু সহ সু-drained মাটির প্রয়োজন। সুষম pH (6.0-7.0) ও কাদামাটি থেকে মুক্ত জমি উপযুক্ত।

  • মাটি প্রস্তুতি: জমি ভালোভাবে চাষ করুন এবং গভীরভাবে মাটি ঝাড়ুন। জমি সম্পূর্ণভাবে আগাছা ও অন্যান্য অবশিষ্টাংশ মুক্ত করুন।

২. চারা নির্বাচন এবং রোপণ

  • চারা নির্বাচন: সুস্থ ও শক্তিশালী চারা নির্বাচন করুন। ডালিমের চারা সাধারণত নার্সারিতে পাওয়া যায়, অথবা আপনি বীজ থেকে চারা তৈরি করতে পারেন।

  • রোপণের সময়: ডালিম সাধারণত বসন্ত মৌসুমে (মার্চ-এপ্রিল) রোপণ করা হয়। মাটি উষ্ণ হলে চারা ভালোভাবে বেড়ে ওঠে।

  • রোপণের পদ্ধতি: গাছগুলির মধ্যে ৫-৮ ফুট ব্যবধান রেখে রোপণ করুন। গর্তের গভীরতা ও প্রস্থ ৩০-৪৫ সেন্টিমিটার হওয়া উচিত।

৩. সেচ

  • সেচ ব্যবস্থাপনা: ডালিম গাছের জন্য নিয়মিত সেচ প্রয়োজন, বিশেষ করে গরম মৌসুমে। তবে, মাটির পানি নিষ্কাশন নিশ্চিত করতে হবে কারণ অতিরিক্ত জল জমা ডালিম গাছের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

  • বৃষ্টির উপর নির্ভরতা: যদি যথেষ্ট বৃষ্টি হয় তবে সেচের পরিমাণ কমাতে পারেন, কিন্তু গরম আবহাওয়ায় নিয়মিত সেচ দিতে হবে।

৪. সার এবং পুষ্টি

  • বেসিক সার: চারা রোপণের আগে মাটিতে কম্পোস্ট বা গোবর সার ব্যবহার করুন।

  • জৈব সার: ফুলে-ফেঁপে ওঠার জন্য বছরে একবার জৈব সার ব্যবহার করুন।

  • অতিরিক্ত সার: গাছের বৃদ্ধির জন্য নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং পটাসিয়ামের সুষম মিশ্রণ ব্যবহার করুন।

৫. পরিচর্যা

  • পানি দেওয়া: নিয়মিতভাবে পানি দিন এবং মাটির আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করুন।

  • প্রতিকার ও রোগ নিয়ন্ত্রণ: পোকা-মাকড়, ব্যাকটেরিয়া, এবং ছত্রাকের জন্য নিয়মিত পরিদর্শন করুন। প্রয়োজনে বৈজ্ঞানিক পরামর্শ নিন এবং প্রাকৃতিক বা রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করুন।

  • ফুল ও ফল সংগ্রহ: ফুল আসার পর প্রায় ৬-৭ মাসের মধ্যে ফল পরিপক্ক হয়। ফল সংগ্রহ করার সময় ধীরে ধীরে প্রাপ্ত ফলগুলো কেটে ফেলুন।

৬. কাটা এবং সংরক্ষণ

  • ফল কাটা: ডালিমের ফল পূর্ণরূপে পাকা হলে কাটুন। ফলের বাইরের ত্বক শক্ত ও লাল রঙ ধারণ করে তখনই সংগ্রহ করা উচিত।

  • সংরক্ষণ: পাকা ডালিম প্রায় দুই সপ্তাহ পর্যন্ত তাজা থাকে। দীর্ঘমেয়াদী সংরক্ষণের জন্য ফলের রস তৈরি করা যেতে পারে বা শুকনো করা যেতে পারে।

৭. মৌসুমি যত্ন

  • শীতকাল: শীতকালে গাছের যত্ন নিন এবং ঠান্ডা আবহাওয়া থেকে গাছ রক্ষা করার ব্যবস্থা করুন।

  • গ্রীষ্মকাল: গ্রীষ্মকালে নিয়মিত সেচ এবং গাছের ছায়া নিশ্চিত করুন যাতে অতিরিক্ত তাপমাত্রা গাছের ক্ষতি না করে।

ডালিম চাষের সফলতার জন্য সঠিক পরিচর্যা, সেচ এবং সার ব্যবস্থাপনা গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় আবহাওয়া এবং মাটির ধরনের ওপর ভিত্তি করে চাষের কৌশলও পরিবর্তিত হতে পারে। কৃষি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে চাষ পরিকল্পনা করুন।

লেখক এর মন্তব্যঃ

অন্যান্য খাবারের চেয়ে ফলমুলে বেশি পরিমাণে পুষ্টিমান বিদ্যমান থাকে। কোন ফলে কি রকম পুষ্টিমান থাকে খাওয়ার আগে তা জেনে নেওয়া জরুরী। এবং কোন শরীরের জন্য ক্ষতিকর তাও জেনে রাখা প্রয়োজন। কিছু কিছু ফল রয়েছে যা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এইসব ফল সম্পর্কে জানার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন।

আরো পড়ুনঃ পৃথিবীর সবচেয়ে মারাত্মক কিছু ফল।

তাই স্বাস্থ্যবান জীবনযাপনের জন্য ডালিমকে আপনার খাবার তালিকায় স্থায়ীভাবে অন্তর্ভুক্ত করা বুদ্ধিমানের কাজ। আপনাকে যদি আমি উপযুক্ত তথ্য দিতে পারি তাহলে আপনি আপনার সকল বন্ধুদের সাথে এ বিষয়টি শেয়ার করবেন এবং ভালো লাগলে আমার ব্লগটি নিয়মিত ভিজিট করবেন।আপনাদের যদি আমার লিখা পড়ে ভালো লাগে তাহলে ইচ্ছা হলে আমার ব্লগটি নিয়মিত পরিদর্শন করবেন। সকলে ভালো থাকবেন ফি আমানিল্লাহ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url